প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ—গতি পাচ্ছে নগর আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। নগর আওয়ামী লীগের কমিটি, থানা কমিটি ও তৃণমূলের সম্মেলন নিয়ে গণভবনে দলীয় প্রধানের সাথে দেখা করেন নেতৃবৃন্দ। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ওয়ার্ড ও থানার পরই নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বে গণভবনে যান সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, সদস্য বিজয় কিষাণ চৌধুরী, বেলাল উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন নেতা।
এরপর নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালামসহ আরও কয়েকজন প্রবেশ করেন গণভবনে।

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, দলীয় সভানেত্রীর সামনে সাংগঠনিক বিষয়ে আমরা খুঁটিনাটি আলাপ করেছি। সাংগঠনিক নানা বিষয়ের মধ্যে সম্মেলন প্রসঙ্গও এসেছে। আমার প্রস্তাব ছিল আগে ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলন এরপর নগরের সম্মেলন। নেত্রী সেটির বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।

নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, সাংগঠনিক কিছু বিষয়ে আমরা আমাদের বক্তব্য দলীয় প্রধানের কাছে তুলে ধরেছি। নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষ করে নতুন নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানে ওয়ার্ড এবং থানা সম্মেলন করার দাবি জানিয়েছি। নেত্রী নগর আওয়ামী লীগের বিষয়টি নিজে দেখবেন, আমাদেরকে ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন শেষ করতে বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ—গতি পাচ্ছে নগর আওয়ামী লীগ 1

২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে নগরীর ৪৪টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে ইউনিট সম্মেলন শুরু করে নগর আওয়ামী লীগ। সেই সম্মেলন নিয়ে সংঘাত ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর কেন্দ্র থেকে ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর ওয়ার্ড সম্মেলন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। সম্মেলন নিয়ে বিরোধ নিরসনে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে কেন্দ্র থেকে পাঁচ সদস্যের একটি ‘রিভিউ কমিটি’ গঠন করে দেওয়া হয়েছিল।
কমিটিতে আছেন- ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ-সভাপতি নঈমউদ্দিন চৌধুরী ও জহিরুল আলম দোভাষ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, নগর কমিটির সদস্য মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। রিভিউ কমিটি কেন্দ্রের অনুমতি নিয়ে ১৫টি সাংগঠনিক থানার জন্য নগর আওয়ামী লীগের একজন করে নেতাকে দায়িত্ব দিয়ে ১৫টি সাংগঠনিক টিম গঠন করে।
ইউনিট সম্মেলন নিয়ে অভিযোগ যাচাই-বাছাইপূর্বক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসন করে ঐক্যবদ্ধভাবে তৃণমূলের সম্মেলন সম্পন্ন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় এই রিভিউ কমিটিকে।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল। সেই সম্মেলনে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সভাপতি এবং কাজী ইনামুল হক দানু সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। কাজী ইনামুল হক দানু মারা যাবার পর ২০১৩ সাল থেকে আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমৃত্যু সভাপতি ছিলেন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। তাঁর মৃত্যুর পর প্রথম সহ-সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের জন্মযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম মহানগরের নেতৃত্বে আছেন মাহতাব-নাছির। তাঁদের নেতৃত্বে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন এবং ২০২১ সালে চসিক নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের ঘরে তুলেছে দলটি। অনুসারীদের মাঝে দ্বন্দ্ব-বিভেদ দেখা গেলেও কোতোয়ালী-বাকলিয়া আসনের সাংসদ ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে বিজয়ী করতে মাঠে ছিলেন আ জ ম নাছির, মেয়র পদে নিজে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও দলীয় প্রার্থী রেজাউল করিমকে বিজয়ী করতেও মাঠে ছিলেন তিনি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।