প্রস্তুত আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ উদ্বোধনের মঞ্চ, নবরূপে সাজছে কক্সবাজার

চট্টগ্রাম সফরের দুই দিন বিরতি দিয়ে এবার কক্সবাজারে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে প্রধানমন্ত্রী ২৮ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৪টি নতুন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি ৪ দিনের আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ ২০২২ উদ্বোধন করবেন। এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে উদ্বোধনস্থল বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজারের ইনানী মোহনা।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠানস্থল ইনানীতে নির্মিত জেটিটি বিভিন্ন দেশের পতাকাসহ নানাভাবে সাজানো দেখা যায়। একই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে নৌ বাহিনীর জাহাজ অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ নৌ বাহিনী জানিয়েছে, ‘সীমানা ছাড়িয়ে বন্ধুত্ব’- এ প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে এবারের আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২৮টি দেশের নৌ বাহিনী/মেরিটাইমের অংশগ্রহণে প্রথমবারের মতো এ আয়োজন। এতে বাংলাদেশসহ ২৮ দেশের ৪৩টি যুদ্ধজাহাজ, ২টি বিএন এমপিএ, ৪টি বিএন হেলিকপ্টার অংশ নেবে।

অংশ নেয়া রাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়া রয়েছে, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, মিশর, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মায়ানমার, নাইজেরিয়া, নেদারল্যান্ডস, ওমান, প্যালেস্টাইন, সুদান, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলংকা, তানজানিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ও যুক্তরাষ্ট্র।

নবরূপে সাজছে কক্সবাজার

প্রস্তুত আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ উদ্বোধনের মঞ্চ, নবরূপে সাজছে কক্সবাজার 1

আগামী বুধবার (৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক নৌ মহড়ার উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের নিকটবর্তী লাবণী পয়েন্টে শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশাল জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রায় সাড়ে ৬ বছর পর প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার আগমণ উপলক্ষে নবরূপে সাজছে পুরো শহর।

সরজমিনে কক্সবাজারের বিভিন্ন সড়কে ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে টাঙানো ব্যানার-ফেস্টুন ও বিলবোর্ড-পোস্টারে ছেয়ে যাচ্ছে শহরের বিভিন্ন সড়ক, উপ-সড়ক। চলছে সড়কের সংস্কার, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, সড়কে লাইটিং ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। বিমানবন্দর হয়ে সার্কিট হাউস ও হলিডে মোড় হতে সৈকত এলাকায় থমকে থাকা প্রধান সড়ক পাকাকরণ কাজ শেষ হয়েছে মাত্র দুদিনেই। এরই মধ্যে জনসভাস্থলের সার্বিক প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে। দিন-রাত্রি টানা কাজ চলছে প্রস্তুতির। সভাস্থলের আশপাশে তোরণ নির্মাণ, ব্যানার-ফেস্টুন দেখা যাচ্ছে সপ্তাহ আগে থেকে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, দেশের অন্য এলাকার চাইতে কক্সবাজারে বেশি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গভীর সমুদ্র বন্দর, কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্প, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, মেরিন ড্রাইভ প্রসস্থকরণ, সাব মেরিনের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ প্রকল্প, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, সাবরাং এক্সক্লেুাসিভ ট্যুরিজম জোন, মহেশখালী এল.এম.জি টার্মিনালসহ অসংখ্য মেগা প্রকল্পের কারণে প্রধানমন্ত্রীর এবারের জনসভার গুরুত্ব অনেক। এসব প্রকল্পের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানাতে লাখো জনতা জনসভাস্থলে আসবে।

তিনি আরও বলেন, শুধু সভাস্থল নয়, আশপাশ এবং পুরো শহরই লোকরণ্য হবে। স্টেডিয়ামের ভিতরেই আড়াই লাখের বেশি মানুষের অবস্থান যোগ্য। সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, বাহারছড়ার মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, হলিডের মোড়, শহীদ সরণী, কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোন হয়ে কলাতলীর ডলফিন মোড় পর্যন্ত ৪ লাখের বেশি মানুষ জমায়েত হওয়ার আশা করছি। এজন্য পুরো এলাকা জুড়ে দুই শতাধিক মাইক লাগানো হচ্ছে।

প্রস্তুত আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ উদ্বোধনের মঞ্চ, নবরূপে সাজছে কক্সবাজার 2

আরও ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের দাবি

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে সোমবার (৫ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। সফরকালে প্রধানমন্ত্রীকে নতুন করে আরও ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানানোর কথা জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

দাবিগুলো হলো-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে হাসপাতাল সংযুক্তিকরণ, কক্সবাজার-মহেশখালী সংযোগ সেতু, বাঁকখালী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, কুতুবদিয়া-মগনামা ফেরি সার্ভিস চালু, কক্সবাজার পর্যটন গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণ, চারলেনের মেরিনড্রাইভ, ছয় লেনের কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে ছয়লেনে উন্নীতকরণ, কক্সবাজার সিটি করপোরেশেন, কক্সবাজার সিটি কলেজ সরকারি করণ, উচ্ছেদকৃত ঝিনুক ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন ও আধুনিক ঝিনুক মার্কেট নির্মাণ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।