‘বঙ্গবন্ধুর সমবায় ভিত্তিক স্বনির্ভরতার স্বপ্ন থেকে শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ’

গড়তে কাজ করছে দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড

সমবায়ের প্রতি অসম্ভব ঝোঁক ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি সমবায়ে অর্থনৈতিক মুক্তিও খুঁজতেন। তাইতো তাঁর হাত ধরে সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে ১৯৭২ সালের ৩ জুন জাতীয় সমবায় দিবসে বললেন—আমাদের সমবায় আন্দোলন হবে সাধারণ মানুষের যৌথ আন্দোলন। কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি জনতার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান।… জেলে সমিতি, তাঁতী সমিতি, গ্রামীণ কৃষক সমিতি যেন সত্যিকারের জেলে, তাঁতি, কৃষকের সংস্থা হয়। মধ্যবর্তী ব্যবসায়ী বা ধনী কৃষক যেন আবার এই সমিতিগুলোকে দখল করে অতীত দুর্নীতির পুনরাবৃত্তি না করে।…আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে উন্নত জীবনের অধিকারী হবে, এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন।

সমবায়ের মাধ্যমে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি খোঁজা বঙ্গবন্ধু ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট পূর্ব বাংলা প্রদেশে সরকারের ‘কৃষি, বন ও সমবায়’ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।

জাতির পিতা সমবায়ের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থা উন্নত করা যে দর্শন তা চর্চা করে দেশের শীর্ষস্থানীয় সমবায় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রামেরেই স্বনামধন্য ‘দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড’। বঙ্গবন্ধু কন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় সমবায় পুরস্কারের মতো গৌরব জমেছে চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির ঝুলিতে।

‘বঙ্গবন্ধুর সমবায় ভিত্তিক স্বনির্ভরতার স্বপ্ন থেকে শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ’ 1

এমন অর্জনেও থেমে নেই চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির নেতৃবৃন্দ, যেন লেগেছে পালে নতুন হাওয়া। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সোসাইটির নেতৃবৃন্দ। প্রতিটি সদস্যের আবাসন নিশ্চিতের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অসংখ্য কল্যাণমুখি প্রকল্প গ্রহণ করে চট্টগ্রামের সুনামকে ছড়িয়ে দিচ্ছে দিগ্বিদিক।

সোসাইটির প্রবীণ সদস্যদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে নান্দনিক পার্ক, শিশু-কিশোরদের সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠতে খেলার মাঠ, সোসাইটির আভ্যন্তরীন মসৃন সড়ক, সড়কে এলইডি বাতি, সোসাইটির সড়কে সুপ্রশস্ত কালভার্টসহ নানা পদক্ষেপ এই সোসাইটির নেতৃবৃন্দের গতিশীল গতিশীল নেতৃত্বের পাশাপাশি উন্নত রুচিরোধেরও স্বাক্ষর।

‘বঙ্গবন্ধুর সমবায় ভিত্তিক স্বনির্ভরতার স্বপ্ন থেকে শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ’ 2

জানতে চাইলে ‘দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর পারভেজ চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, দেশ বিভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানের চট্টগ্রামে বসবাসরত কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এই সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা আমরা যখন নেতৃত্বে আসি, বিশেষ করে সাবেক মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন সাহেব যখন সোসাইটির নেতৃত্বে আসেন তখন বেশ কিছু পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করি। সব সদস্যদের আবাসন নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, ফয়’স লেক রোজ ভ্যালি আবাসিক এলাকা, খুলশী আবাসিক এলাকার পর বড়দীঘি পাড়ে আমরা ৭৯ একর জায়গায় প্রকল্প গ্রহণ করেছি। কাজ এগিয়ে চলছে, ১৬৮ জনকে প্লট বরাদ্দ দেয়েছি। আমরা আমাদের সব সদস্যের আবাসন নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর।

সোসাইটির কল্যাণকর পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি আবাসিক প্রকল্পে স্কুল-কলেজ, মসজিদ, পার্ক রাখা হয়েছে। এতে নিজেদের সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার পাশাপাশি সদস্যগণ স্বাস্থ্য পরিচর্যার সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ধর্মীয় আবহ যাতে বজায় থাকে সেজন্য নান্দনিক মসজিদ প্রকল্প রাখা হয়েছে।
কল্যাণকর কাজ শুধু সদস্যদের মাঝে সীমাবদ্ধ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনায় আমরা নগরের বিভিন্ন স্থানে খাবার বিতরণ করেছি, শীতকালে কম্বল বিতরণ করি।

নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির নানান জঞ্জাল সরিয়ে গত ১০ বছরে সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে উল্লেখ করে আলমগীর পারভেজ বলেন, ১৯৫১ সালের জরাজীর্ণ দোতলা ভবনের স্থানে এখন ১১ তলা বিল্ডিং হয়েছে। এই অফিসে বসার মতো পরিবেশ ছিল না। এখন সুপ্রশস্থ অফিসের এই বিল্ডিংয়ে ৩২টি ফ্ল্যাট সদস্যদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

‘বঙ্গবন্ধুর সমবায় ভিত্তিক স্বনির্ভরতার স্বপ্ন থেকে শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ’ 3

সোসাইটির ‘স্মার্ট আবাসন’ স্লোগান সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাজ্জাদ বলেন, আমাদের সোসাইটির জায়গা থেকে শুরু করে সব ডকুমেন্ট আমরা অনলাইন করেছি। কেউ যদি প্লট কিংবা ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তর করতে চান তিনি তার সব কিছু অনলাইনে পাবেন। এতে কেউ প্রতারিত হওয়ার পথ বন্ধ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এমপি মহোদয় আমাদের অংকুর সোসাইটি বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসেছেন। তিনি নিজ থেকেই মন্তব্য করেছেন—‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখছে দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি’। মন্ত্রী মহোদয়ের এমন প্রশংসা অর্জনের কারিগর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন। তার দক্ষ নেতৃত্বে আমাদের সোসাইটির এই পরিবর্তন।

‘বঙ্গবন্ধুর সমবায় ভিত্তিক স্বনির্ভরতার স্বপ্ন থেকে শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ’ 4

আ জ ম নাছির সোসাইটিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়েগেছেন উল্লেখ করে মোহাম্মদ সাজ্জাদ বলেন, তিনি আমাদের সোসাইটির শুধু সাবেক সভাপতিই নন, তিনি আমাদের অভিভাবক। তিনি সোসাইটিকে নিয়ে একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমাদেরও স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। আর সেই স্বপ্নের কাছাকাছি সোসাইটিকে তিনি নিয়ে গেছেন। আমাদের সব অর্জনেই তার হাতের ছোঁয়া, মেধা-মননের ছাপ রয়েছে। তাঁর দিক নির্দেশনা আমরা সামনে এগিয়ে যাবো।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।