ব্যাংকের টাকা মেরে পালিয়ে বেড়ানো মোর্শেদ-মাহজাবিন দম্পত্তির দেশ ত্যাগ নিষেধ

ব্যাংকের টাকা মেরে আত্মগোপনে থাকা জাতীয় পার্টি (জাপা) নেতা-নেত্রী দম্পতি মোর্শেদ মুরাদ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী সাবেক এমপি বেগম মাহজাবিন মোর্শেদসহ চার জনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি তাদের পাসপোর্ট আদালতে জমার আদেশ দেন। এই সময়ের মধ্যে তারা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারেন সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেন আদালত।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এই আদেশ দেন বলে চট্টগ্রাম খবরকে জানান আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম।

মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমের ওই কোম্পানীর কাছে বেসিক ব্যাংকের পাওনা প্রায় তিনশ কোটি টাকা। শুধু বেসিক ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎই নয়, মোর্শেদ মুরাদ নামে-বেনামে তার পারিবারিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৯৯০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা আত্মসাত করার অভিযোগ রয়েছে। বিপুল অঙ্কের এই খেলাপি ঋণের দায় নিয়ে মোর্শেদ-মাহজাবিন দম্পতি পলাতক রয়েছেন।
আত্মসাৎ করা ঋণের টাকা কিস্তিতে পরিশোধের শর্তে দুদকের মামলায় তাদের জামিন দেয় আদালত। কিন্তু শর্তানুযায়ী কিস্তি পরিশোধ না করা ও আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত তাদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। সেই থেকে তারা পলাতক।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোর্শেদ মুরাদ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী বেগম মাহজাবিন বর্তমানে জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা। মোর্শেদ চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি। আর তার স্ত্রী মাহজাবিন মোর্শেদ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের (মহিলা আসন-৪৫) সাবেক সদস্য। মোর্শেদ মুরাদ সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকও ছিলেন।

বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় মোর্শেদ-মাহজাবিন দম্পতির বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সিরাজুল হক। এর মধ্যে একটি মামলায় মোর্শেদ মুরাদের মালিকানাধীন ক্রিস্টাল স্টিল অ্যান্ড শিপ ব্রেকিং লিমিটেডের বিরুদ্ধে ১৩৪ কোটি ৯৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৮৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। অপর মামলায় বেসিক ব্যাংকের চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করে ১৪১ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার ১০৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় মাহজাবিন মোর্শেদের বিরুদ্ধে।

দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অপর দুই জন হলেন সৈয়দ মোজাফফর হোসেন এবং হুমাইরা কবির। এরা দুজনই আই জি নেভিগেশন লিমিটেডের ডিরেক্টর। মাহজাবিন ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।