ভবন নেই লংগদুর ৪ ইউপিতে, ভোগান্তিতে সেবাগ্রহীতারা

গ্রামের মানুষের জন্য সবচেয়ে কাছের প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)। এখানে বিভিন্ন সেবা পেয়ে থাকেন তারা। কিন্তু রাঙামাটির লংগদু উপজেলার ৭ ইউপির মধ্যে ৪টিতে নেই কমপ্লেক্স ভবন। পরিত্যক্ত, জরাজীর্ণ ও অপরিসর কক্ষে কোনোমতে চলছে দৈনন্দিন সেবা কার্যক্রম। এতে জনপ্রতিনিধি ও পরিষদের কর্মীদের যেমন সমস্যায় পড়তে হয়, তেমনি ভোগান্তি পোহাতে হয় সেবাগ্রহীতাদের।

জানা গেছে, উপজেলার বগাচতর ইউপির জরাজীর্ণ ভবনে প্রতি বছর রঙের প্রলেপ দিয়েও ঢাকা যাচ্ছে না ভঙ্গুর দশা। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিব বসছেন একই রুমে। ফলে সেবা পেতে ঘটছে বিঘ্ন। একই অবস্থা উপজেলার গুলশাখালী, মাইনীমূখ, ভাসান্যাদমসহ ৪টি ইউনিয়নের। নতুন ভবন না থাকায় ইউনিয়ন পরিষদে সঠিক সময়ে দেখা মিলছে না উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, ভেটেনারি সহকারী, ইউনিয়ন সমাজকর্মীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের।

এলাকাবাসীরা জানান, ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে এসে সেরকম অবকাঠামো না থাকায় প্রতিটি কাজে মানুষকে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বগাচতর ইউপির কার্যক্রম চলছে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবনে। নেই গ্রাম আদালত। ছোট একটি কক্ষে কোনো রকমে চলছে ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের কার্যক্রম। চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যদের আলাদা বসার কথা থাকলেও এক কক্ষেই বসতে হয় সবাইকে। এছাড়াও ইউপি ভবন না থাকায় জন্ম ও মৃত্যুসনদ, নাগরিকত্ব সনদ, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনসহ নানা দাপ্তরিক কাজে সেবা প্রাপ্তিতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

ইউপি সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য ইউপির মত দৃষ্টিনন্দন ভবন থাকা তো দূরের কথা, বগাচতর ইউপিতে শৌচাগারের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে কার্যালয়ের সকলেই। উপজেলার অন্য ৬টি ইউপিতে সচিব থাকলে বগাচতর ইউপির স্থায়ী কোনো সচিব নেই। সপ্তাহে দুইদিন অন্য ইউপির সচিব অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে কার্যক্রম চলছে। উল্লেখ্য যে, ৭ ইউপির ১টিতেও নেই হিসাব সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে দাপ্তরিক কার্যক্রম ও জনসেবা।

এ বিষয়ে বগাচতর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বশর বলেন, বগাচতর ইউপির ভবন এবং সচিব অত্যন্ত জরুরি ও প্রয়োজনীয়। ভবন ও সচিব না থাকার কারণে এই ইউনিয়নে কাঙ্ক্ষিত সেবা আমরা জনগণকে দিতে পারছি না। আমরা যখন ভিজিএফের পণ্য দিতে যাই, তখন সব থেকে বড় সমস্যায় পড়তে হয়। যেহেতু, উপজেলা সদর থেকে এই পরিষদটি অনেকটা দূরে, সেহেতু আমার বিনীত আবেদন অতি দ্রুত এখানে একটি ভবন ও ইউপি সচিব দেওয়া হোক।

লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকিব ওসমান বলেন, ইউপির ভবন না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া-নেওয়ায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। যে সব ইউনিয়নে ভবন নেই সেগুলোর স্টিমেশন করে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন এলে আমরা ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তবে বিষয়টির দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা রাখছি এবং পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যা গুলোও সমাধান করার চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।