‘ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজ করে জনগণের দৌড় গোড়ায় সেবা প্রদান করা হচ্ছে’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজ করে জনগণের দৌড় গোড়ায় সেবা প্রদান করা হচ্ছে। অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান, ই-নামজারী, ই-পর্চা, অনলাইন জলমহাল ব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল রেকর্ডরুম থেকে মৌজাম্যাপ ও পর্চা ডাকযোগে সরবরাহসহ বিভিন্ন সেবা ইতিমধ্যেই জনগণকে প্রদান করা হচ্ছে।

সোমবার (২২ মে) বিকেল তিনটার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে ভূমি সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) দেওয়ার জন্য আগে স্বশরীরে ভূমি অফিসে যেতে হতো। এখন আর যেতে হবে না। ঘরে বসে অনলাইনে পরিশোধ করা যাবে।

তিনি বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম সর্ম্পকে সাধারণ নাগরিকের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘স্মার্ট ভূমি সেবায় ভূমি মন্ত্রণালয়’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে আগামী ২২ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে ভূমি সেবা সপ্তাহ উদযাপন করা হবে। এর ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম জেলাসহ এ বিভাগের ১১টি জেলা, ১০৩টি উপজেলা, সার্কেল এবং সকল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ভূমি সেবা সপ্তাহ-২০২৩ উদযাপন করা হবে।

বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক যৌথভাবে আগামী ২৭ মে চট্টগ্রাম নগরের এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম হলে “ভূমি সেবা সপ্তাহ-২০২৩” সংক্রান্ত জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। সভায় ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্বামান চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ভূমি সেবা সপ্তাহে ভূমি সেবা পেতে জেলা প্রশাসন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহায়তা ও সেবা নিতে পারবেন। দক্ষ, স্বচ্ছ ও জনবান্ধব ভূমি সেবা প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের অঙ্গীকার।

যে সকল সেবা প্রদান করা হবে

চট্টগ্রাম এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে ১০টি স্টলের মাধ্যমে আগত সেবা প্রার্থীদের সেবা প্রদান করা হবে। ১০টি স্টলের মধ্যে ৬টি স্টলে মহানগরের ৬টি সার্কেল ভূমি অফিসের ভূমি বিষয়ক যাবতীয় সেবা প্রদান করা হবে। ১টি স্টলের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এলএ শাখা সংম্লিষ্ট বিষয়ে সেবা প্রদান করা হবে। ১টি স্টলের মাধ্যমে রেকর্ডরুমের খতিয়ান সরবরাহ সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হবে এবং অপর ২টি স্টলের মাধ্যমে বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তের ভূমি বিষয়ক সেবা অর্থাৎ অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান, ই-নামজারীর আবেদনসহ অন্যান্য সেবা প্রদান করা হবে।

এছাড়াও অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান এর জন্য রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কার্যক্রম এবং বর্তমান ভূমি উন্নয়ন কর সম্পু্র্ণভাবে অনলাইনে গ্রহণ করণ বিষয়ে তথ্য প্রদান করা হবে। ই-নামজরির আবেদন গ্রহণ, নিষ্পত্তিকৃত এলএ কেইসের ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ, অনলাইনে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি প্রাপ্তির আবেদন গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা সরবরাহ করা এবং অনলাইনের মৌজা ম্যাপ ডাক-বিভাগের মাধ্যমে সরবরাহ করণের বিষয়ে তথ্য প্রদান করা হবে।

এর পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে চলমান জরিপ কার্যক্রম বিষয়ে গণশুনানি, আপত্তি/আপিল দাখিল ও নিষ্পত্তির কার্যক্রম গ্রহণ। মাঠ পর্চা, রেকর্ড হস্তান্তরসহ জনগণকে সকল সেবা প্রদান করা হবে। সেবা গ্রহীতাদের সেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন জিজ্ঞাসার জবাব সরাসরি উত্তর প্রদানের জন্য সেবা বুথে একজন কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন।

সংবাদ সম্মেলন শেষে বিকেল চারটার দিকে সদর সার্কেল ভূমি অফিসে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম ও সদর সার্কেলের সঙ্গে সমন্বয় করে ‘ভূমি সেবা সপ্তাহ-২০২৩’ আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. আবু রায়হান দোলন প্রমুখ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।