মিতু হত্যা– নিজের মামলায়ও জামিন মেলেনি বাবুলের

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় নগরীর পাঁচলাইশ থানায় নিজের দায়ের করা হত্যা মামলায় জামিন মেলেনি সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের।

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী।

তিনি বলেন, স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারের পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়েছিল। আদালত শুনানি শেষে জামিন না মঞ্জুরের আদেশ দিয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক গত ২৭ ডিসেম্বর যে মামলার বাদি বাবুল আক্তার সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিলেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ৯ জানুয়ারি আদালত বাবুল আক্তারকে নিজের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন।

একই ঘটনায় মিতুর বাবার করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন বাবুল আক্তার। এক ঘটনায় দুই মামলা চলতে পারে না জানিয়ে বাবুল আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, আমরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে যাব।

২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বের হওয়ার পর চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে। ঘটনার পর তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন ও শাশুড়ি সাহেদা মোশাররফ এই হত্যার জন্য বাবুলকে দায়ী করে আসছিলেন।

শুরু থেকে চট্টগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) মামলাটির তদন্ত করে। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটির তদন্তের ভার পিবিআইকে দেয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার যে মামলাটি দায়ের করেছিলেন, সেটির তদন্ত শেষ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন না নিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে বাবুল পিবিআই থেকে মামলার তদন্তভার সরিয়ে অন্য সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে দেন। ইতোমধ্যে পিবিআইতেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে তিন বার।

দীর্ঘ তদন্তের পর হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি করে গত বছরের ১১ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুলকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। পরদিন ১২ মে দুপুরে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার শ্বশুর অর্থাৎ নিহত মিতুর বাবা। মামলায় অপর সাত আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক ভোলা, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।