সিত্রাং : মিরসরাইয়ে ড্রেজার ডুবে ৮ শ্রমিক নিখোঁজ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সাগরে থাকা ড্রেজার ডুবে আট শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা নিখোঁজদের উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। এর আগে সোমবার রাত ১০টার দিকে নিখোঁজ হওয়ার পর এখনো তাদের সন্ধান মেলেনি।

উপজেলার ১৬ নম্বর সাহেরখালি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ নম্বর বসুন্ধরা এলাকায় সাগরের মাঝে বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিনটি রাখা ছিল।

জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগরে জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঝড়ো হাওয়ায় বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন সৈকত-২ পানিতে ভেসে গিয়ে ডুবে যায়। ড্রেজারে অবস্থানরত শ্রমিকরা হলেন- শাহীন মোল্লা (৩৮), ড্রেজার চালক ইমাম মোল্লা (৩২), মাহমুদ মোল্লা (৩২), আলামিন (২১), তারেক, আবুল বশর (৪৫) ও আরো দু’জন নিখোঁজ হন। সকল শ্রমিকের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি মোল্লাবাড়ি থানায়।

ড্রেজারে থাকা শ্রমিক আব্দুস সালাম বলেন, ‘ড্রেজারে আমিসহ নয়জন শ্রমিক ছিলাম। দুর্যোগের কথা শুনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমি ড্রেজার থেকে নেমে নিরাপদ স্থানে চলে আসি। বাকিরা ড্রেজারেই অবস্থান করছিলেন।’

ড্রেজার ম্যানেজার রেজাউল করিম জানান, ঘটনাস্থলে আরো ছয়টি ড্রেজার রাখা ছিল। সতর্কতা সংকেত পেয়ে অপরাপর সকল শ্রমিক নিরাপদ স্থানে চলে গেলেও দুর্ঘটনায় পতিত ড্রেজারের আট শ্রমিক আসেনি।

তিনি আরো জানান, ড্রেজারের বালু উত্তোলনকারী শ্রমিকরা দিন-রাত ড্রেজারে অবস্থান করে থাকে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমেরও ব্যবস্থা রয়েছে।

ড্রেজার ম্যানেজার ও সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে আকস্মিক ড্রেজার ডুবে যায় এবং সেখানে কাজ করা শ্রমিকরা নিখোঁজ হন। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

খবর পেয়ে মিরসরাই থানার পুলিশ রাত ১২টা থেকে ঘটনাস্থলে অবস্থান করে।

মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ কবির হোসেন বলেন, ‘সাগরে ড্রেজারসহ আট শ্রমিক নিখোঁজের খবর পেয়ে একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সংশ্লিষ্ট কোস্ট গার্ড কমান্ডারকে বিষয়টি মোবাইলে অবগত করেও তাদের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। পরে ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।’

সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে বালু উত্তোলন কাজে নিয়োজত একটি ড্রেজার আট শ্রমিকসহ নিখোঁজ হওয়ার বিষয় শুনেছি। সোমবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে চলে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। তারপরও তারা কেন নিরাপদ আশ্রয়ে গেলেন না তা জানি না।’

এ বিষয়ে কোস্টগার্ডের মিরসরাই স্টেশনের কন্টিজেন্ট কমান্ডার জহিরুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার কল করেও সংযোগ স্থাপন করা যায়নি।

মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারি বলেন, ‘খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছি। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে উদ্ধার করা যায়নি।’

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।