মিরসরাই-ফটিকছড়ি সড়ক দোকানের দখলে, পথচারীদের ভোগান্তি

আবাসিক ও বাণিজ্যিক—সব মিলিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হিসেবে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাই-ফটিকছড়ি সড়ক। তবে এর মিরসরাই অংশের প্রবেশপথ দখল করে দুই পাশে অর্ধশতাধিক দোকান গড়ে উঠেছে। এসব দোকানের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে বোঝার উপায় নেই এটি মিরসরাই-ফটিকছড়ির ২৯ কিলোমিটার পার্বত্য এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এর ফলে প্রতিনিয়ত চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন পথচারীরা। অভিযোগ আছে অবৈধ দোকানগুলো থেকে দৈনিক ও মাসিক ভিত্তিতে মাসোহারা আদায় করে থাকে একটি চক্র।

জানা গেছে, সড়কটির প্রবেশপথ থেকে ৫০ মিটার দূরত্বে রয়েছে মিরসরাই ডিগ্রি কলেজ ও মিরসরাই স্টেডিয়াম। সড়কের মুখেই রয়েছে মিরসরাই কাঁচাবাজার ও উপজেলা ডিজিটাল পোস্ট অফিস। গুরুত্বপূর্ণ এসব প্রতিষ্ঠান থাকার পরও সড়কের মুখে দুই পাশে বেশ জোর খাটিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী দোকান। যার ফলে যানজট ও নাগরিক বিড়ম্বনা এখানে এখান নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। চোখের সামনে পোক্ত প্রমাণ থাকতেও নীরব সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের মুখে দুই পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে ফলের দোকান, পোশাকের দোকান, চা-দোকান। উপজেলা পোস্ট অফিসের প্রধান ফটকের দুই পাশে এবং ফুটওভার ব্রিজের সিঁড়ির সঙ্গে একাধিক দোকান। দোকানের পণ্য ও ক্রেতাদের ভিড়ে পোস্ট অফিসে প্রবেশ করতে না পেরে সেবা গ্র্রহীতাদের দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেছে।

মরিয়ম নামের জনৈক নারী পোস্ট অফিসে এসেছেন ব্যাংকের কাজে রেভিনিউ স্ট্যাম্প নিতে। দোকান ও ক্রেতাদের ভিড়ে পোস্ট অফিসের প্রবেশপথ খুঁজে পাচ্ছেন না।

এক দোকানের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে ৩০টি মতো দোকান রয়েছে। প্রতিটি দোকানির ব্যবসা হোক না হোক দৈনিক ভিত্তিতে টাকা দিতে হয় বাজারের ইজারাদারকে। দোকান অনুযায়ী দৈনিক ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয় এসব অস্থায়ী দোকান থেকে।

ভুক্তভোগী আশরাফ নামে এক পথচারী জানান, সরকারি রাস্তায় দোকান বসিয়ে এভাবে টাকা নেওয়া অন্যায়। সরকার তো ইজারাদারকে বাজারের বাইরে সড়কে দোকান বসিয়ে টাকা আদায় করতে বলেনি।

এ বিষয়ে মিরসরাই পোস্টমাস্টার নুরুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দোকানিরা বাধা মানে না। বাজার কমিটির সভাপতি মেয়র গিয়াস উদ্দিনকে জানানো হয়েছে। তারপরও কাজ হয়নি।

মিরসরাই পৌরসভার মেয়র ও বাজার কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, অস্থায়ী দোকানিরা সামান্য দোকান করে তাদের পরিবার চালায়। এটা তাদের জীবিকার পথ। তারপরও চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত রাখতে তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সড়ক ও জনপথ চট্টগ্রাম (উত্তর)-এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, এসব অবৈধ দোকানের কারণে মানুষ রাস্তায় চলাচল করতে পারেন না। পাশে একটি ফুটওভার ব্রিজ, সেটিও ব্যবহার করতে পারছেন না। দ্রুত সড়ক সম্প্রসারণ কাজ শুরু হবে। তার আগেই সড়কের দুই পাশ দখলমুক্ত করা হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।