মেয়র পদে উপ-নির্বাচন, নৌকায় উঠতে চান ৭ নেতা

আগামী ১৭ জুলাই বান্দরবান পৌরসভার উপ-নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এনিয়ে বান্দরবান জেলাজুড়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও শুরু করেছেন নানা প্রচেষ্টা। তবে কে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মেয়র পদে মনোনয়ন সেটা দেখার অপেক্ষায় সবাই।

জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে বান্দরবানের পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বীর অকাল মৃত্যুতে পদটি শূন্য হওয়ার পর প্যানেল মেয়র সৌরভ দাশ শেখর ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নির্বাচন কমিশন আগামী ১৭ জুলাই বান্দরবান পৌরসভার উপ-নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বেড়েছে কয়েক গুন। এখনও পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে ৭ জন মেয়র পদে মনোনয়ন চান বলে জানা গেছে।

বান্দরবান নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বান্দরবান পৌরসভা এলাকায় ভোটার সংখ্যা ৩৩ হাজার ৭৪৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৮ হাজার ৬০১ জন, নারী ভোটার ১৫ হাজার ১৪৬ জন।

বান্দরবান জেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতা কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বান্দরবান পৌরসভার উপ-নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রকাশ্যে না হলেও নিজেদের মত করে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা, পৌর ও সাবেক ছাত্রলীগের নেতাসহ অন্তত ৭ জন মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদের মধ্যে রয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লক্ষী পদ দাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাহাদুর, পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সৈরভ দাশ শেখর, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকাশ বড়ুয়া, জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদ এ্যাডভোকেট ইবাল করিম এবং সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ চৌধুরী।

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লক্ষীপদ দাস বলেন, রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার সুবাদে জনসেবা করার আকাঙ্ক্ষা সব সময়ই থাকে। তাই দল থেকে মনোনয়ন দিলে অবশ্যই উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেলল হক বাহাদুর বলেন, গত তিন বার পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলাম। দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। আমি আশা করছি এবার এবার দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়ন পাবো।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকাশ বড়ুয়া বলেন , দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার ফলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জনসেবা করার সুযোগ হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পেলে আসন্ন উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।

বান্দরবান পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সৌরভ দাশ শেখর বলেন, বিগত ১২ বছর ধরে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে জনসেবা করার সুযোগ দিয়েছে জনগণ। এছাড়া দলের সিদ্ধান্তে ৩ বার প্যানেল মেয়র ও ৪ বার ভারপ্রাপ্ত বান্দরবান পৌর মেয়র হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করার সুযোগ হয়েছে। সেই সুবাদে আসন্ন উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আশাবাদ ও দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশা করছি। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন না পেলেও যাকে মনোনীত করা হবে তাকে সর্বাত্বক সহযোগিতা করবেন বলেও জানান তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদ এ্যাডভোকেট ইবাল করিম বলেন, মেয়র পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রত্যাশায় দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছি। তবে দলীয় সিদ্ধান্তকে স্বর্বাত্বক সমর্থনে কাজ করে যাবো।

মনোনয়ন প্রত্যাশী শামসুল ইসলাম বলেন, দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। আর যদি অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয় তাহলেও দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতেই কাজ করবেন বলে জানান তিনি।

সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ চৌধুরী বলেন, ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৫ বছর সুনামের সহিত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে দ্বায়িত্ব পালন করেছি। বান্দরবানের মানবিক সংগঠন বান্দরবান পরিবার ও শিশু সংগঠন শাপলা কুঁড়ি নামে দুইটি মানবিক সংগঠনের কনভেনার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। গত পৌর নির্বাচনেও মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। এবারও প্রত্যাশা করছি। তবে দলীয় সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিয়ে দলের জন্য কাজ করে যাবেন বলে জানান তিনি।

বান্দরবান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলেন, এবারের উপ-নির্বাচনে অনেকেই মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে প্রত্যাশা করেছেন। তবে দলের সুনাম রক্ষা ও জনগণের প্রত্যাশিত নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে ক্লিন ইমেইজের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে আশা তাদের।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।