রাঙ্গুনিয়ায় সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় ইটভাটা ম্যানেজার গ্রেফতার

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ইসলামপুর ইউনিয়নের মঘাছড়ি এলাকায় অবৈধ ইট ভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিককে জিম্মি করে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় কাঞ্চন কুমার তুরি (৩৬) নামে ইটভাটার ম্যানেজারকে গ্রেফতার করেছে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রানীর হাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার কাঞ্চন কুমার উপজেলার রাজা নগর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অমূল্য ডাক্তার বাড়ির জীবন কৃষ্ণ তুরির ছেলে।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহাবুব মিলকী জানান, ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিককে জিম্মি ও মারধরের ঘটনায় করা মামলায় কাঞ্চন কুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেফতারের জন্য জোর অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। শীঘ্রই অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।

এর আগে রোববার (২৫ ডিসেম্বর) রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ইসলামপুর ইউনিয়নে অবৈধ ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক আবু আজাদ।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু আজাদ নিজে বাদী হয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী (৫৫), সদস্য মহিউদ্দিন তালুকদার মোহন (৪০), ইটভাটার ম্যানেজার কামরান (৩০) ও মোহনের সহযোগী কাঞ্চন তুরি (৩০)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আরও ৫-৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ সংগ্রহ করতে রোববার চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের মঘাছড়িতে সড়কের পাশে মাটি তুলে নামহীন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় মেম্বার মহিউদ্দীন তালুকদার (মোহন) ৫-৬ জনকে সঙ্গে নিয়ে আমার (সাংবাদিক আবু আজাদ) মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারধর করেন।

আরও বলা হয়, এরপর আমাকে একটি সাদা রংয়ের নোহা গাড়িতে তুলে নিয়ে মঘাছড়ি বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে প্রকাশ্যে আমার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে আবারও মারধর করা হয়। আমার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও আইডি কার্ড তারা কেড়ে নেন।

মারধরের এক পর্যায়ে মোহনের মোবাইল ফোন দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। আমার পরিচয় জানার পর তিনি আমাকে বলেন,এরকম সাংবাদিক মেরে ফেললে কিছু হবে না। এরপর আমার মোবাইল দিয়ে গুগল ড্রাইভে ঢুকে সব ছবি-ভিডিও ডিলেট করে দেওয়া হয় এবং মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলা হয়। পরে পকেটে মারধরকারী স্থানীয় ইউপি সদস্য নিজের ভিজিটিং কার্ড ঢুকিয়ে দিয়ে ক্ষমতা থাকলে কিছু করে দেখাতে বলেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।