লাইসেন্স নিয়ে হাতি পালার আড়ালে বিক্রি করেন হাতির দাঁত—হরিণের চামড়া, ধরলো র‌্যাব

হাতি লালন-পালনের লাইসেন্স নিয়ে আব্দুল মালেক (৬৭) হাতি দিয়ে পাহাড়ে গাছ টানান, বিয়ে বাড়িতে দেন হাতি ভাড়া। পাচার করেন হাতির দাঁত, হরিণের চামড়াসহ বন্য প্রাণীর দেহের মূল্যবান অংশ। তাকে র‌্যাব চট্টগ্রাম নগরীর শুলকবহর এলাকা থেকে হাতে নাতে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল মালেক মৌলভীবাজারের মৃত আব্দুল আলীর ছেলে।

শনিবার (২৭ মে) দুপুরে বিষয়টি চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করেন র‌্যাব-০৭এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নূরুল আবছার। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন শুলকবহর এলাকার একটি বাড়ীর ৩য় তলার একটি রুমে বন্য প্রাণী নিধনকৃত হাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া সংগ্রহে রেখে বিক্রয় করার চেষ্টা করছেন এক ব্যাক্তি। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭এর একটি টিম অভিযান চালায়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আব্দুল মালেক পালানোর চেষ্টা করেন।

তিনি আরও বলেন, আসামী মো আব্দুল মালেককে জিজ্ঞাসাবাদে ও দেখানো মতে তার ভাড়াকৃত বসত রুমের খাটের নিচ থেকে একটি সাদা প্লাষ্টিকের বস্তার ভিতর থেকে ৪ টি হাতির দাঁত, ছোট বড় ও মাঝারী আকারের ২০টি হাতির দাঁতের খন্ডাংশ (মোট ১৪ কেজি) এবং একটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাবের জ্ঞিসাবাদে আব্দুল মালেক জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পারমিট ব্যতিত বন্যপ্রানী (হাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া) বিভিন্ন অংশ বিশেষ সংগ্রহ করে পরবর্তীতে তা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করে আসছে। উদ্ধারকৃত মালামালের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানায় র‌্যাব।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল মালেক মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানার বাসিন্দা। তিনি ১৯৭৬ সাল থেকে তার বাবার সাথে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি এলাকায় হাতি দেখভাল করার জন্য আসেন। তার বাবার কয়েকটি হাতি ছিল। ১৯৯৮ সালে তার বাবা মারা গেলে হাতির ব্যবসা দেখভাল করার জন্য তিনি ছয় বছর যাবত রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থানার মরিশ্যা এলাকায় ছিলেন। তিনি একজন লাইসেন্সধারী হাতির পালক।
২০১০ সালের পরে লাইসেন্স প্রভিশন হলে তিনি পুনরায় লাইসেন্স করেন। তবে তিনি স্থায়ীভাবে তখন বাঘাইছড়ি থাকতেন না, ২/৪ দিন থেকে আবার মৌলভীবাজার চলে যেতেন। তার বৈধভাবে মোট ছোট বড় ১২টি হাতি আছে। তবে স্থানীয় তথ্যানুযায়ী তার আরো ২৪/২৫টি রেজিষ্ট্রেশনবিহীন হাতি রয়েছে যা দিয়ে তিনি বিয়ে বাড়িতে ভাড়াসহ পাহাড়ি এলাকায় গাছ টানার কাজ করেন। পাহাড়ি এলাকা থেকে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন বন্যপ্রানীর চামড়া, হাতির দাঁতের ব্যবসা করছেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।