‘লেখালেখিকে কাগজের পাতায় ফিরিয়ে আনতে হবে’

‘আমাদের লেখালেখি এখন আটকে গেছে ফেসবুকের সীমায়, সেটাকে আবার কাগুজে পাতায় জোরালোভাবে ফিরিয়ে আনতে হবে। এক্ষেত্রে গল্প প্রতিযোগীতার মতো আয়োজন বড় ভূমিকা রাখতে পারে।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গল্প লেখা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রতিযোগিতার বিচারক হাসান মুহাম্মদ রোমান। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ২ নম্বর গ্যালারিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য বিষয়ক সংগঠন ‘রাইটিং রায়ট’ এর উদ্যোগে গল্প লেখা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি আরও বলেন, সাহিত্য হলো সমাজের দর্পণ। মানুষ বেঁচে থাকে তার সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্যচর্চা বিষয়ক নানাবিধ উদ্যোগ নিয়মিত দেখা যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাইটিং রায়ট এর উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃষ্টিশীল লেখার প্রবনতা বৃদ্ধি করবে। বর্তমানে আকাশ সংস্কৃতির যুগে মানুষের লেখার চর্চা কমে গিয়েছে।

প্রথমবারের মতো রাইটিং রায়ট কর্তৃক আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন প্রায় দুই শতাধিক প্রতিযোগী। তিন পর্যায়ের যাচাই বাছাইয়ের পর চূড়ান্তভাবে বিজয়ী গল্পগুলো নির্বাচন করা হয়। প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেন যথাক্রমে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের টিপু মারমা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের তামান্না আক্তার এবং ইতিহাস বিভাগের কাজী সৌরভ আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট, বই এবং সনদপত্র তুলে দেন আয়োজক এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাইটিং রায়টের হেড অব মার্কেটিং এবং ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ মােহাম্মাদ রিয়াদ। সমাপনী বক্তব্যে রাইটিং রায়টের প্রধান সমন্বয়ক মাঈন উদ্দীন মাহমুদ সাহিত্যচর্চার এই ধারা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সভাপতি মাহবুব এ রহমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নবীন লেখকদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, ‘একজন তরুণ লেখকের বই প্রকাশের দিকে তখনই অগ্রসর হওয়া উচিত, যখন প্রকাশক নিজে থেকে আগ্রহী হয়ে তার বই প্রকাশ করতে চাইবে। এর আগে বিভিন্ন পত্রিকা, ম্যাগাজিনে লেখালেখি প্রকাশ এবং বিভিন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে নিজেকে ঝালিয়ে নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, রাইটিং রায়টের কর্ণধার মাইন উদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ তরুণ কলাম-লেখক ফোরাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান বুলবুল, দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি নাজমুল হুদা, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম আরিয়ান প্রমুখ।

প্রচারণা, নাম নিবন্ধন থেকে শুরু করে গল্প জমা নেওয়া, যাচাই-বাছাই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি অনুষদের ৯ জন অভিজ্ঞ শিক্ষকের সমন্বয়ে গড়া বিচারক প্যানেলের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে যারা গল্প লিখতে ভালোবাসেন, যারা নিজেদের সঙ্গে সমসাময়িক গল্পকারদের গল্পকে যাচাই করে দেখার সুপ্ত বাসনা লালন করেন তাদেরকে এক প্লাটফর্মে নিয়ে আসার প্রয়াস হিসেবে যাত্রা শুরু করে রাইটিং রায়ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য বিষয়ক নবীন এ সংগঠনের প্রথম আয়োজন রাইটিং রায়ট গল্প লেখা প্রতিযোগিতা

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।