সংবাদ লেখনীতে চবিসাসের ছাব্বিশ পার

প্রতিষ্ঠার ছাব্বিশ বছর পেরিয়ে সাতাশ বছরে পা দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস) এ উপলক্ষ্যে সংগঠনটির ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে।

‘সংবাদ লেখনীতে ছাব্বিশ পেরিয়ে’ প্রতিপাদ্যে মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের সামনে থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

শোভাযাত্রা শেষে দুপুর ১টায় চবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্বোধন করেন চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে। এতে ‘সাংবাদিকতার সংকট ও সম্ভাবনা: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিনের সঞ্চালনায় এবং চবিসাস সভাপতি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ইমরান হোসাইন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব এ রহমান।

অনুষ্ঠানের মূখ্য আলোচক যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, গণমাধ্যমের পরিমাণ বাড়লেও সাংবাদিকদের চাকরির নিশ্চয়তা ক্রমেই কমছে। সাংবাদিকরা সবার অধিকার নিয়ে লিখছি, অথচ তাদের যেসব অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সে বিষয়ে বলার কেউ নেই। গণমাধ্যম একটি শক্তিশালী গোষ্ঠীর কাছে সবসময় নত থাকতে হয়। এ জায়গাগুলো থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকতার পরিসর দিনদিন বড় হচ্ছে। অনেক সংকট থাকলেও এর সম্ভাবনাও ব্যাপক। কিন্তু আমরা কি একটি আন্তর্জাতিক মানের মিডিয়া তৈরি করতে পেরেছি? গণমাধ্যম হলো একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। কিন্তু শক্তিশালী এ স্তম্ভকে আমরা কতটুকু প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে পেরেছি, সেটাও ভাবার সময় এসেছে।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, জনগণের কণ্ঠস্বর হিসেবে সাংবাদিকদের যেকোনও স্থানে অবাধ বিচরণের সুযোগ এবং অধিকার রয়েছে। তাই সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষা করতে হবে আমাদের। উন্নত রাষ্ট্রগুলো যেভাবে সাংবাদিকতাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। আমরা এখনও সে পর্যায়ে পৌঁছাতে পারিনি। আমাদের হয়তো অনেক মিডিয়া রয়েছে, কিন্তু আমরা এখনও অনেকক্ষেত্রে পরাধীন। তাই এ মহান পেশাকে সমৃদ্ধের লক্ষ্যে আমাদের কাজ করা উচিৎ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, সাংবাদিকরা জাতির দর্পণ। তাদের লেখনী জনগণের কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করে। তারা চাইলে একটি জাতিকে যেমন সমৃদ্ধ করতে পারে, তেমনি চাইলে নিচেও নামাতে পারে। কারণ সাংবাদিকদের লেখালেখির মাধ্যমে মানুষ সবকিছু সম্পর্ক জানতে পারে। তাই বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে সাংবাদিকতা চর্চার আহ্বান থাকবে আপনাদের প্রতি।

সমাপনী বক্তব্যে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি সবসময় সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করেছে। আমরা সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ থাকতে পারে, তবে আমাদের কাজ সবাইকে সমান চোখে দেখা। আমরা সেটাই চেষ্টা করি। যাদের অবদানে গত ২৬ বছর এ সংগঠন এগিয়েছে, তাদেরকে আজকের এ দিনে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।

এছাড়াও আলোচনা অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান, প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া, সিন্ডেকেট সদস্য অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম এবং এছাড়া বক্তব্য রাখেন চবিসাস সাবেক সভাপতি এবং যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক শাহাব উদ্দিন নিপু প্রমুখ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।