সরকারি চাকুরিতে সীমাবদ্ধ না থেকে উচ্চশিক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে —লায়ন এম কে বাশার

বিএসবি-ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশার বলেছেন, দেশে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর ১ শতাংশের কম মানুষ সরকারি চাকুরি করেন। এখানে সর্বোচ্চ বেতন ৭৮ হাজার টাকা। তাও আবার ১০-২০ বছর চাকুরি করার পর। আবার এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পড়াশোনার পেছনে যায় লাখ লাখ টাকা। কিন্তু বাইরের দেশে চাইলেই বছরে কয়েক কোটি টাকা আয় করা যায়। আবার পড়াশোনার পাশাপাশি চাকুরিও করা যায়। তাই আমাদের শুধু সরকারি চাকুরিতে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, বিদেশে উচ্চশিক্ষায়ও এগিয়ে আসতে হবে।

শনিবার (১১ মার্চ) চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এইচএসসি/সমমান পাস শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও উচ্চশিক্ষা বিষয়ক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। উচ্চশিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ও বিএসবি-ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের যৌথ আয়োজনে চলছে এই সংবর্ধনা ও উচ্চশিক্ষা বিষয়ক সেমিনার।

লায়ান এম কে বাশার বলেন, বিগত দুই বছরের তুলনায় এবার আমাদের তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থী কমেছে। এটা একদিক দিয়ে ভালো আবার অন্যদিক দিয়ে খারাপ। শিক্ষার্থী কমায় কম্পিটিটর কমছে আবার দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা পিছিয়ে পড়ছে। যে যেভাবে চিন্তা করে থাকেন।

তিনি বলেন, এ বছর দেশে প্রায় ১৩ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তির সুবিধা আছে। যেখানে পাস করেছেন প্রায় ১০ লাখ। সুতরাং সবাই ভর্তি হতে পারবেন। তবে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজগুলোতে অনেকে চাইলেই ভর্তি হতে পারবেন না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসন সংখ্যা সীমিত। এখানে সুযোগ পেতে হলে একদম উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় থেকে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হন অধিকাংশ শিক্ষার্থী। আমরা শিক্ষার্থীদের সে সমস্যা সমাধানে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত স্টুডেন্ট লোনের ব্যবস্থা করছি। এছাড়া বিভিন্ন দেশে সম্পূর্ণ ফ্রি স্কলারশিপের সুযোগ করছি আমরা। এর পাশাপাশি আমরা একদম অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকভাবে ভারত বা অন্য দেশে পাঠাই তারপর সেখান থেকে আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়ায় সহজে পাঠানো যায়।

তিনি বলেন, যারা দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বা মেডিকেলগুলোতে ভর্তির সুযোগ পায় না কারা কি থেমে থাকবে? না তাদের কেউ কেউ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বা মেডিকেলে ভর্তি হবেন। কিন্তু দেশের এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও খরচ কম নয়। কোন কোন মেডিকেলে ১৫-১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। যার কম টাকা দিয়ে বিদেশ থেকে ডিগ্রী নেওয়া সম্ভব। আবার সেখানে চাকুরি পাওয়ার সুবিধা যেমন বেশি বেতনের সুবিধাও বেশি।

সরকারি চাকুরিতে সীমাবদ্ধ না থেকে উচ্চশিক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে —লায়ন এম কে বাশার 1

এই শিক্ষাউদ্যেক্তা বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে কম করে হলেও ৫০ হাজার স্টুডেন্ট বিদেশে যায়। গত এক বছরে ৪৯ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী বিদেশে গিয়েছেন। করোনার সময়েও শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়াশোনা করতে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, যারা পড়াশোনা করছেন তাদের পুরো পড়াশোনা করতে হবে। অর্ধশিক্ষিত হলে মহাবিপদ। যারা পড়াশোনা করছেন না তারা চাইলেই যে কোন চাকুরি করতে পারবেন। কিন্তু যারা পড়াশোনা করেছেন তারা চাইলেই যেকোন চাকুরি করতে পারেন না।

তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে গিয়ে অনেকে আর দেশে ফিরেন না। তবে সেখানে দোষের কিছু নেই। যারা বিদেশে পড়াশোনা করতে গিয়ে নিজেদের একটা অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন তারা দেশের অর্থনীতিতে বিরাট এতটা অবদান রাখছে। যার প্রমাণ আমরা করোনাকালীন সময়ে পেয়েছি।

অনুষ্ঠানে এইচএসসিতে উত্তীর্ণ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মেডেল বিতরণ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিগণ তাদের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেই সাথে বিদেশে পড়াশোনার প্রক্রিয়ার ওপর আলোচনা করেন।

প্রসঙ্গত, আগামীকাল রোববার পর্যন্ত চলবে এই আয়োজন। এতে বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকছেন। এতে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।