সরকার উচ্চশিক্ষাকে দেশবাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে— নওফেল

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি বলেছেন, সরকার শিক্ষায় ডিজিটাল পদ্ধতির প্রবর্তন, নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, অধিকতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিও অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে সরকার উচ্চশিক্ষার পরিধি সম্প্রসারণ করে যাচ্ছে। উচ্চশিক্ষাকে দেশবাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে।

রোববার (২৭ মার্চ) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ আরেফিন নগরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে আয়োজিত সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’র দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন কম্পিউটার বিজ্ঞানী, শিক্ষক, কলামিস্ট এবং লেখক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হক, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক এম এ মালেক, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, খ্যাতিমান শিক্ষাবিদগণসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

ব্যারিস্টার নওফেল বলেন, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ করোনা মহামারির মধ্যেও শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখে শিক্ষার্থীদেরকে যথাসময়ে ডিগ্রি প্রদান করায়, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক—শিক্ষিকাবৃন্দ ও কতৃর্পক্ষকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমি বিশ্বাস করি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা তাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা ও সৃজনশীলতাকে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজে লাগিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়তে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাবে। সাথে সাথে সদ্য ডিগ্রিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীকে অভিনন্দন ও তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয় নিয়ে বর্তমান সরকার বিগত এক যুগ ধরেই উচ্চশিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চ শিক্ষার বিকাশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তারই সুযোগ্য কন্যা দেশনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অগ্রগতিকে শক্তিশালী করে চলেছেন। সকল প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মানসম্পন্ন শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা এবং উদ্ভাবনী শক্তির প্রতি তাঁর মনোনিবেশ প্রশংসনীয়।

সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, স্নাতকবৃন্দ, কর্মমুখর পৃথিবী তোমাদের ডাকছে, সামনে অনেক কাজ, এই ঘনবসতিপূর্ণ দেশের উন্নয়নে সামান্য প্রাকৃতিক সম্পদ হলো আমাদের পুঁজি। কিন্তু আমাদের রয়েছে ১৬ কোটি অসামান্য সম্পদ—মস্তিষ্ক। সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এই মস্তিষ্ককে শানিত করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আমি বিশ্বাস করি তোমরা সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছো। তোমাদের অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা দিয়ে এখন আমাদের সীমিত সম্পদে জাপান কিংবা কোরিয়ার মত মূল্যসংযোজন করতে হবে। তাহলেই আমরা সম্পদশালী দেশে পরিণত হবো। মানব সম্পদের থেকে মূল্যবান কোনো সম্পদ নেই এবং আমাদের তা রয়েছে যথেষ্ট।

ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজকের পর থেকে আপনারা কর্মজীবনে পদার্পণ করবেন যেখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জিত জ্ঞান আপনাদের সর্বাত্মক কাজে লাগবে। মনে রাখবেন আজকে আপনার জীবনে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি হতে যাচ্ছে এবং আরও একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। যে সুন্দর আগামীর স্বপ্ন আপনারা আজ এখানে বুনে গেলেন সে স্বপ্ন আপনাদের হাতে একদিন ধরা দেবে। আজকের এই কনভোকেশন সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে।

উপাচার্য অধ্যাপক প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সমাবর্তন নিঃসন্দেহে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যই অত্যন্ত মর্যাদা, সম্মান ও গৌরবের। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীরা আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে কর্মযজ্ঞে নিজেদের মেধার স্বাক্ষর রাখতে যাচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তারা নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শ ও মূল্যবোধকে অন্তরে ধারণ করে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাবে এবং স্ব স্ব পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করবে।

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় সমাবর্তনে ভালো ফলাফলের জন্য চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ১০ জন, ভাইস— চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড ৩৯ জন, ডিন অ্যাওয়ার্ড ৩৮ জন এবং গ্রাজুয়েট একাডেমিক এক্সিলেন্স অর্জন করেন ৯ জন শিক্ষার্থী।

রাষ্ট্রপতি ও সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি চ্যান্সেলর আবদুল হামিদের অনুমোদনক্রমে সমাবর্তন অধিবেশনে সভাপতিত্ব ও আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি প্রদান করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী। এবার বিভিন্ন বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মোট সাত হাজার ৮৫৩ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।