সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হলো আলোচিত মিতু হত্যা মামলার বিচারকাজ

সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার বিচারকাজ। আসামীপক্ষ সাক্ষ্যগ্রহণ ঈদের পরে শুরু করার জন্য সময় চাইলে রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষ ৪৫ মিনিট যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের পর আদালত সাক্ষ্য শুরুর আদেশ দিলে প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন।

রোববার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ সময় বাবুল আক্তার, আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান মিয়া ও মোতালেব মিয়া প্রকাশ ওয়াসিমকে আদালতে হাজির করা হয় এবং জামিনে থাকা আসামি এহতেশামুল হক ভোলাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. আবদুর রশিদ রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে অংশ নেন।

বাবুল আক্তারের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ জানান, চার্জ গঠনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি আবেদন করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের আদেশের অপেক্ষায় সাক্ষ্যগ্রহণ ঈদের পরে শুরু করার জন্য আমরা সময়ের আবেদন করেছিলাম। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষ ৪৫ মিনিট যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করা শেষে আদালত সাক্ষ্য শুরুর আদেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, আদালত সাক্ষ্য শুরুর আদেশ দিলে মাহমুদা খানম মিতুর পিতা মোশাররফ হোসেন জবানবন্দি উপস্থাপন শুরু করেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বের হওয়ার পর চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে। ঘটনার পর তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন ও শাশুড়ি সাহেদা মোশাররফ এই হত্যার জন্য বাবুলকে দায়ী করে আসছিলেন।

শুরু থেকে চট্টগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) মামলাটির তদন্ত করে। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটির তদন্তের ভার পিবিআইকে দেয়। সেটির তদন্ত শেষ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে বাবুল পিবিআই থেকে মামলার তদন্তভার সরিয়ে অন্য সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে দেন। ইতোমধ্যে পিবিআইতেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে তিন বার।

দীর্ঘ তদন্তের পর হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি করে গত বছরের ১১ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুলকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। পরদিন ১২ মে দুপুরে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার শ্বশুর অর্থাৎ নিহত মিতুর বাবা। তখন থেকে বাবুল আক্তার কারাগারে আছেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।