সাগরে মাছ শিকার নিষেধ ৬৫ দিন, নিবন্ধন পাচ্ছেন আরও ১৬ হাজার জেলে

বঙ্গোপসাগরের এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার জুড়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকা আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার মাছ শিকার করে। গত অর্থ বছর পর্যন্ত ৬৮ হাজার ইঞ্জিন চালিত নৌকা আর ২৫১টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার মাছ শিকারের অনুমতি ছিল। এই বিশাল জলরাশিতে চট্টগ্রামের অর্ধ লক্ষ জেলে মাছ শিকার করেন। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে নিষেধাজ্ঞায় সহযোগিতা পান মাত্র ২৭ হাজার তিনজন জেলে। অবশেষে নিবন্ধনের জন্য জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আরও ১৬ হাজার জেলের নিবন্ধনের ফাইল গেছে মন্ত্রণালয়লে। ১৬ হাজার নিবন্ধন শেষ হলে আরও প্রায় আট হাজার জেলের ফাইল যাবে মন্ত্রণালয়ে।

আজ (২০ মে) থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকছে। সমুদ্র থেকে কূলে ভিড়েছে মাছ ধরার সব নৌযান। এতে জেলেদের হাঁক-ডাকে মুখরিত সমুদ্র থাকবে শান্ত। শুধু পন্যবাহী জাহাজ ও নৌ যানের দেখা মিলবে সাগরে।
নিষেধাজ্ঞার এই সময়টাতে চট্টগ্রামের ২৭ হাজার তিনজন জেলে পরিবারের প্রতিটি পরিবার ৮৬ কেজি করে চাল পাবেন। তবে ১৬ হাজার নতুন জেলে পরিবার নিবন্ধনের জন্য ফাইল পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। ১৬ হাজার নিবন্ধন হলে আরও আট হাজার জেলের তালিকা যাবে নিবন্ধনের জন্য।

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকতা ফারহানা লাভলী বলেন, নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে কর্মহীন হয়ে পড়া চট্টগ্রাম জেলার ২৭ হাজার তিনজন জেলে পরিবারের পাশে থাকছে সরকার। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি জেলে পরিবার ৮৬ কেজি করে চাল পাবেন। প্রথম কিস্তিতে ৫৬ কেজি এবং পরের কিস্তিতে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এ হিসাবে তিন লাখ ২২ হাজার ২৫৮ কেজি (বা দুই হাজার ৩২২ দশমিক ২৫৮ টন) চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

নতুন জেলে নিবন্ধন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের টার্গেট আরও ২৪ হাজার জেলে পরিবারকে সরকারের সহযোগিতার আওতায় নিয়ে আসা। নতুন ১৬ হাজার জেলে পরিবারের নিবন্ধনের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠিয়েছি। এই পরিবারগুলো নিবন্ধন হয়ে আসলে পরের বার আরও আট হাজারের ফাইলা পাঠানো হবে।

তবে বছরে এই ৬৫ দিনের বাইরে মা ইলিশ ধরায় ২২ দিন, ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরায় ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা, মার্চ-এপ্রিলের দুই মাসের অভয়ারণ্যের নিষেধাজ্ঞাসহ মোট ১৪৭ দিন নিষেধাজ্ঞা পালন করতে হয় সারা দেশের বিভিন্ন এলাকার জেলেদের।

দেশের মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা ও মাছের বংশবিস্তারে ২০১৫ সাল থেকে বঙ্গোপসাগরে প্রতিবছর ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ। শুরুতে শুধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকলেও ২০১৯ সালে সব ধরনের নৌযানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। সরকারি হিসেবে এতে সমুদ্রে মৎস্য প্রজনন বৃদ্ধি পেয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।