সাতকানিয়ায় মাদরাসা শিক্ষকের নির্মম বেত্রাঘাতে ছাত্র গুরুতর আহত

সাতকানিয়ায় মাদরাসা শিক্ষকের নির্মম বেত্রাঘাতে হেফজখানার এক ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। আহত ছাত্রের নাম হাবিবুর রহমান বাবলু (১০)। তাকে বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মাওলানা আহমদ শফি। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার ছদাহা আয়শা ট্রাস্ট এতিমখানা ও হেফজখানায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত ছাত্রের মা হাসিনা আক্তার বাদি হয়ে শনিবার রাতে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

আহত ছাত্র হাবিবুর রহমান বাবলু ছদাহা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মাইজপাড়ার সৌদি আরব প্রবাসী আবদুর রশিদের ছেলে।

এ ব্যাপারে ছাত্রটির মা হাছিনা আক্তার বলেন, এখন থেকে প্রায় ২ মাস আগে আমার ছেলে বাবলুকে আয়েশা ট্রাস্ট এতিমখানা ও হেফজখানায় হেফজ বিভাগে ভর্তি করায়। ভর্তির পর থেকে সে পুরো সপ্তাহ মাদরাসায় থাকতো। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বাড়ি আসে।

গত বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বাড়ি না আসায় হুজুরকে ফোন দিলে তিনি আমাকে বলেন, ছেলে পড়া শেষ করতে পারেনি। তাই এ সপ্তাহে সে বাড়ি যাবে না। কিন্তু ওইদিন বিকেলে মাদরাসার দেওয়াল টপকে পালিয়ে সে বাড়ি চলে আসে। তখন দেখি হুজুরের নির্মম বেত্রাঘাতে আমার ছেলের পুরো শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। ক্ষত চিহ্নগুলো পঁচতে শুরু করেছে। যন্ত্রনায় সে ছটফট করছিল।

পরে তাকে সাতকানিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছদাহা আয়শা ইসলামিয়া ট্রাস্ট এতিমখানা ও হেফজখানার পরিচালক মাওলানা আহমদ শফি মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ছেলেটি পড়া-লেখায় অমনোযোগী ও ফাঁকি দিচ্ছে। এজন্য মারধর করেছি।

তবে মারধরের পরিমাণটা একটু বেশি হয়ে গেছে। এজন্য ছাত্রের মায়ের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছি।

সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ডা. এপি বণিক বলেন, বেত্রাঘাতে ছেলেটির শরীরে অনেক বেশি জখম হয়েছে। এজন্য তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, শিক্ষকের নির্মম বেত্রাঘাতে হেফজ বিভাগের আহত হওয়ার ঘটনায় ওই ছাত্রের মা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় শিক্ষক মাওলানা আহমদ শফি ও তার সহযোগি মো. লোকমান নামে দুইজনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।