সেই পাপ্পীর বিরুদ্ধে এবার বালি উত্তোলন সরঞ্জাম চুরির মামলা

গ্রেপ্তার তিনজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ

ক্যাপ্টেন কে এম হাফিজুর রহমানের সাথে প্রতারণা করে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভয়ে পালিয়ে বেড়ানো বোয়ালখালীর পাপ্পী এবার আসামি হলেন চুরির মামলায়। ক্যাপ্টেন হাফিজের সাথে চুক্তি করে টাকা মেরে দেওয়ার পাশাপাশি তার প্রায় পাঁচ কোটি টাকার সরঞ্জাম আত্মসাতের চেষ্টায় মামলা খেলেও এবার প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশের নাম করে বালু উত্তোলনের সরঞ্জাম চুরির চেষ্টা চালানোর অভিযোগে পাপ্পীসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

বোয়ালখালী থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনছুর আলম পাপ্পীসহ চুরির মামলায় অপরা আসামিরা হলো তার মো. আলম (৪৮), সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের নতুনপাড়া এলাকার মো. আবুল মনছুরের ছেলে মো. রমজান আলী (৩৭), একই উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মাদামবিবিরহাট জাহানাবাদ এলাকার শামছুল আলমের ছেলে মো. কাশেম (৩৬), একই এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে আবছার হোসেন (১৯)। পাপ্পী ও তার ভাই ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকলেও অপর তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে।

রোববার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈনুর রহমান চৌধুরী চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, পুলিশ পরিচয়ে বালি উত্তোলনের প্রায় পাঁচ লাখ টাকার সরঞ্জাম চুরির চেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। তিন আসামিকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছি। তথ্য প্রযুক্তির কিছু বিষয় আছে। আমরা তদন্ত করছি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাতে চোর চক্রের কয়েকজন সদস্য একটি ক্রেন ও পিকআপ নিয়ে কালুরঘাট এলাকায় এম হাসান বিল্ডার্সের ড্রেজারের মালামাল চুরির চেষ্টা চালায়। এ সময় এম হাসান বিল্ডার্সের কর্মচারীরা কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, এগুলো চুরি করা মালামাল, থানায় অভিযোগ আছে এসব মালামালের বিরুদ্ধে। আপনারা থানায় যোগাযোগ করুন। পরে মালামাল ট্রাকে তুলতে ব্যর্থ হয় তারা।

পরদিন শুক্রবার চান্দগাঁও থানার এসআই রোকন পরিচয় দিয়ে মোহাম্মদ হাসানকে এক ব্যক্তি কল করেন। এসময় তিনি মালামালগুলোর বিষয়ে অভিযোগ আছে, এগুলো অন্যের মালামাল বলে নানারকম অভিযোগ ছুড়ে দেন। এরপর বিকাল ৩টায় মালামালগুলো জোরপূর্বক ট্রাকে তুলে নিয়ে চুরির চেষ্টা করলে পুলিশে খবর দেয়া হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে ওই চোর চক্রের ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।

জানতে চাইলে এম হাসান বিল্ডার্সের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বেশ কয়েকবার পুলিশের এসআই রোকনুজ্জামান পরিচয় দিয়ে আমাকে ফোন করেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি আমাকে পুলিশের পরিচয় দিয়ে নানারকম ভয়ভীতি দেখান এবং বিকাশে চাঁদা দাবি করেন। গত শুক্রবার বিকেলে কালুরঘাটের ইস্পাহানি রোড এলাকা থেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানের ড্রেজিংয়ের পাইপসহ আনুমানিক ৫ লক্ষ টাকার যন্ত্রপাতি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতেও তারা মালামাল চুরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। প্রতারক বুঝতে পেরে আমি পুলিশে খবর দিই। পরে পুলিশ গিয়ে ট্রাকের চালক, হেলপারসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। মূল আসামি পাপ্পি, ববি ও মোবাইলে পুলিশ পরিচয় দেয়া রোকন নামে ওই ব্যক্তি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।

আরও পড়ুন:
বাল্কহেড ফুটো করে ডুবিয়ে রেখেছিল পাপ্পী! চুরি করেছে ইঞ্জিনসহ দামী যন্ত্রাংশ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।