হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড়িদের ফুলবারেং

ফুলবারেং হচ্ছে নিপুণ হাতের বুননে তৈরি একটি বেতের তৈরি ঝুঁড়ি। এই ঝুঁড়িকে বলা হয় ফুলবারেং। এক একটি ঝুঁড়ি যেন এক একটি শিল্পকর্ম ও কারুকাজ। মূলত শুভ বিবাহের জন্য ব্যবহার করা হয় ফুলবারেংটি। বিয়ের দিনই একমাত্র বরের পক্ষ থেকে কনের অলংকার, পোশাক-পরিচ্ছদ ও যাবতীয় সরঞ্জামাদি নেওয়া হয় কনের বাড়িতে এই ফুলবারেং দিয়ে।

ছবির ঝুঁড়ি ও ছোট্ট কাপড়টি হচ্ছে পাহাড়িদের হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ যাকে চাকমা ভাষায় বলা হয় ফুলবারেং। আর নকশার তৈরি কাপড়টি হচ্ছে আলাম।

হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড়িদের ফুলবারেং 1

অন্যদিকে তঞ্চঙ্গ্যা ভায়ায় বলা হয় ফুঁ কালং ও আলাম। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে এটি ভিন্ন রকম নামে পরিচিত।

প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে বর্তমানেও এই রীতি পাহাড়িদের মাঝে প্রচলন রয়েছে।

তবে পেশাগত ঝুঁড়ি তৈরি করার দক্ষ কারিগর না থাকার কারণে এই ফুলবারেংটি প্রায় বিলুপ্তির পথে।

স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ি মেয়েদের পোশাকে উপরে একটি অংশ থাকে সেটাকে বলা হয় হাদি। এই হাদিতে বিভিন্ন ধরনের নকশা বোনা হয়, নকশাগুলো একসাথে সংরক্ষণ করে তৈরি হওয়া কাপড়কে আলাম বলে।

পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের নকশা তুলে হাদি বুনানো হয় এবং নকশা তোলা হয়। তাই আলামের নকশাগুলোকে ফুল বলা হয়। এগুলো আলামে উল্লেখযোগ্য ফুল বা জু বলা হয়। স্থানীয় ভাষায় জু বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।

যেমন- বেগুন বিচি ফুল, কুয়া চুগ ফুল, জুনিপুগ ফুল, গুমচগলা ফুল, সাবকাঙাল ফুল ইত্যাদি। অর্থাৎ এককথায় বলতে গেলে যত রকমের ফুল আছে ঐ ফুলগুলো আলামে তোলা হয়। হাদি বুনানোর সময়ে খেয়াল রাখা হয় কোন ফুলের পরে কোন ফুলটা সাজিয়ে দিলে হাদিতা আরো বেশী সুন্দর ও আকর্শণীয় দেখাবে।

স্থানীয়রা পাহাড়ের হারিয়ে যেতে বসা এই প্রাচীন সংস্কৃতি সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।