২৬ নভেম্বর কর্ণফুলী টানেলের একটি টিউব উদ্বোধন

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের একটি টিউব আগামী ২৬ নভেম্বর উদ্বোধন করা হচ্ছে। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরো টানেল জানুয়ারিতে উদ্বোধন করা হবে।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তিনি বলেন, আগামী ২৬ নভেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু টানেলের একটি টিউব উদ্বোধন করার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। পুরো টানেল উদ্বোধন হবে আগামী জানুয়ারিতে।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (কর্ণফুলী টানেল)। এটির কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে। টানেল অভ্যন্তর ও বাহিরে কিছু কাজ বাকি থাকায় নির্ধারিত সময়ে টানেল উদ্বোধন হচ্ছে না।

টানেল নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, “ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনো টানেলের অভ্যন্তরে ৯৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখনও বাকি রয়েছে ৭ শতাংশ কাজ। বৈদ্যুতিক লাইন ও কিছু টেকনিক্যাল কাজ বাকি থাকায় কখন উদ্বোধন হবে তা এ মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে উদ্বোধনের বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারকরা ঠিক করবেন।”

তিনি আরও বলেন, “টানেলের অভ্যান্তরের কাজ ছাড়াও বাহিরে কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এসব কাজ শতভাগ নিশ্চিত না করে টানেল উদ্বোধন সম্ভব নয়। দ্রুত কাজ শেষ করতে বাংলাদেশ ও চায়নার ৩০০ প্রকৌশলীসহ একহাজার কর্মী রাত-দিন কাজ করছেন।”

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের কাজ শুরুকালে প্রকল্পের নির্ধারিত শেষ সময় ছিলো ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর। চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গা প্রান্তরের নেভাল একাডেমী থেকে নদীর ১৫০ ফুট গভীর দিয়ে প্রবেশ করে আনোয়ারা প্রান্তে ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দৈর্ঘে এ টানেল ঢাকা-চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কে যুক্ত হবে।

এই টানেল প্রকল্প নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন এ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি)। টানেলের দুই প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক ইতিমধ্যে তৈরী করা হয়েছে। এরমধ্যে কর্ণফুলী-আনোয়ারা প্রান্তে এ্যাপ্রোচ সড়ক রয়েছে চার কিলোমিটারে ফ্লাইওভার রয়েছে ৭০০ মিটার। চার লাইনের ২২ দশমিক ৪০ মিটারপ্রস্থ এ্যাপ্রোচ সড়ক এবং ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হয়েছে।

কর্ণফুলী উপজেলার ক্রসিং ওয়াইজংশন থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘির মোড় পর্যন্ত ৮.১০ কিমি ও কালাবিবির দীঘির মোড় থেকে আনোয়ারা সদর পর্যন্ত ২ দশমিক ৪০ কিমি. সড়ক ১৬০ ফুট প্রশস্তে ছয় লাইনের কাজও শেষ। যার ব্যয় ধরা হয়েছে, প্রায় ৩শত ৯০ কোটি টাকা। এসব কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।

টানেল চালুর প্রথম বছর ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করবে। যেটি ক্রমান্বয়ে বাড়তে পারে বলেও ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে প্রায় ৫১ শতাংশ কনটেইনার পরিবহনকারী ট্রেইলর ও বিভিন্ন ধরণের ট্রাক ও ভ্যান ৪৯ শতাংশ বাসসহ ছোট যানবাহন চলবে।

দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, “আনোয়ারার কালাবিবি দিঘীর মোড় থেকে কর্ণফুলীর শিকলবাহা ক্রসিং পর্যন্ত ৬ লাইনের কাজে ইতিমধ্যে ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণে কিছু জটিলতার কারণে চার লাইন সড়কের কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। সর্বসাধারণের জন্য লাইন সড়কটি দ্রুত খুলে দেওয়া হবে।”

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।