২৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিতে স্থবির চট্টগ্রাম, মেয়রের ঘরেও পানি

সোমবার (২০ জুন) দুপুর ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের আমবাগান আবহাওয়া অফিস ২৮২ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। আর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস রেকর্ড করেছে ১৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।

আমবাগানের রেকর্ড করা বৃষ্টিপাত চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া অফিস।

একটানা বৃষ্টিতে নগরীর নীচু এলাকা পানিতে ডুবার সাথে সাথে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা যেসব এলাকায় রয়েছে সেসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

চান্দগাঁও এলাকার এক ভবন মালিক ফরিদ উদ্দিন চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, আমি ৫ তলা বাড়ি করেছি দুই যুগের মতো হয়েছে। এর আগে এখানে বসবাস করেছি আরও বেশ কয়েক বছর। কখনো আমার বাড়ির সীমানায় পানি আসেনি। এবার পার্কিং ডুবেছে। আমার রিজার্ভ ট্যাংকির মুখ উঁচু থাকার পরও পানি ঢুকেছে। সকাল থেকে রিজার্ভ ট্যাংকি পরিস্কার করতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, গলির সড়কে দুপুর ৩টা পর্যন্ত হাঁটু পানি ছিল। বৃষ্টি হলে আবারও বাড়তে পারে।

শুলকবহর থেকে হুমায়ুন কবির বলেন, গলিতে কোমরের কাছাকাছি পানি। গতকাল (রোববার) রাতে বাসায় পানি ঢুকুছে। সারা রাত একদিকে পানি ঢুকে, আরেক দিকে সেচ দিয়েছি। সোমবার দুপুরে ঘর থেকে পানি সরেছে। কিন্তু একটু বৃষ্টি হলেই আবার ঘুরে পানি ঢুকবে।

বাদুরতলা থেকে সরওয়ার কামাল জানান, চকবাজার-বহদ্দাহাট সড়কের বাদুরতলা অংশ পানির নিচে। গলিগুলোতে হাঁটু পানি। অধিকাংশ বাড়ির নীচতলায় ঘরে বা গ্যারাজে পানি জমে আছে। তার নিজের গাড়িসহ পার্কি করা প্রায় সব গাড়িই পানিতে বিকল হয়ে আছে।

চকবাজার চকসুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী আলমগীর জানান, চকবাজার পোস্ট অফিসের সামনের সড়ক এবং দুনিরপোল পানির নীচে। কেবি আমান আলী সড়ক, ফুলতলাও জলমগ্ন বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

হালিশহর থেকে আলী মাসুদ নামে বেসকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলেন, সকালে অফিস থেকে সিকিউরিটি জানিয়েছেন অফিসের নীচতলা ডুবে আছে। দিনে বেলা বাড়ার সাথে সাথে পানি কমে এসেছে। তবে বিকেল পর্যন্ত সড়কে পানি আছে।

বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে চান্দগাঁও থানার ওসি মাঈনুর রহমান চৌধুরী জানান, তখনও থানা হাঁটুপরিমাণ পানিতে তলিয়ে রয়েছে।

অপর দিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিমের বাড়িও হাঁটুপরিমাণ পানির নিচে বলে জানান ছাত্রলীগের এক নেতা। মেয়রের প্রতিবেশী ও তার অনুসারী ওই ছাত্রলীগ নেতা গলিতে কোমর পানি থাকার কথাটিও স্বীকার করেন।

দক্ষিণ বাকলিয়া থেকে আসিফ মাহমুদ জানান, এলাকার প্রধান সড়কটি পানিতে ডুব আছে। দোকানপাট বন্ধ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ রয়েছে।

টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় পাঁচলাইশ থানাধীন কাতালগঞ্জে স্থানীয় পেট্রোল পাম্পের সামনে খান বাড়ির নিচতলায় বাড়ির কেয়ার টেকার আবু তাহের ড্রাইভার ও মোহাম্মদ হোসেন মারা যান।

একই দিন নগরের চশমা হিলে পাহাড় ধসে মো. আবু রায়হান (১২) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান।

আরও পড়ুন:
জলাবদ্ধতার জন্য ধীরগতির মেগা প্রকল্পকেই দায়ী করল ক্যাব

ফ্লাইওভারের ওপরে যানজট, নীচে জলজট–অচল শতাধিক গাড়ি

চট্টগ্রামে মধ্যরাতে পাহাড় ধসে নিহত ৪

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।