আনোয়ারায় বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ উন্নয়ন কাজের প্রদর্শনী উপকূলবাসীর

১৯৯১ সালের বয়ে যাওয়া সেদিনের ঘূর্ণিঝড়ের থাবায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়া উপকূলীয় বাসীর কাছে ঐতিহাসিক এক ভয়াল প্রলয়ংকরী দিন ২৯ এপ্রিল। উপকূলবাসীর স্বজন হারানো ও দুঃখ বেদনা দিনের কথা ৩৩ বছরেও ভুলেনি উপকূলবাসী।

সে থেকে উপকূলবাসীর দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার উপকূলবাসীর সুরক্ষায় স্থানীয় সাংসদ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির প্রচেষ্টায় বেড়িবাঁধের নির্মাণের ৫শত ৭৭ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

২৯ এপ্রিল মধ্যরাতে আঘাতহানা প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল চট্টগ্রামের আনোয়ারার রায়পুরের উপকূলীয় এলাকা। জলোচ্ছ্বাসে উপকূল পরিণত হয়েছিল বিরাণ ভূমিতে। উপকূলে সরকারের এসব উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিভিন্ন পোস্টার ব্যানারে প্রদর্শনী ও র‌্যালী করেছে উপকূলবাসী।

স্থানীয় রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আমিন শরীফের নেতৃত্বে উন্নয়ন কাজের প্রদর্শনী ও র‌্যালী শেষে স্থানীয়রা করেন আলোচনা সভা। ২৯ এপ্রিলকে সামনে রেখে গত তিনদিন ধরে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে তিনদিন ধরে জেলেদের চাল বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে তারা।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আবু ছৈয়দ, দক্ষিণ জেলা যুবলীগ নেতা আরমান উদ্দিন, এনামুল হক এনাম, উপজেলা যুবলীগের সদস্য জালাল উদ্দিন, জামাল উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি এইচএম নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, যুবলীগের সভাপতি এমএ হান্নান, বিভিন্ন ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও মহিলা ইউপি সদস্য, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

চেয়ারম্যান আমিন শরীফ বলেন, ২০১৮ সালের পূর্বেও এই রায়পুর ইউনিয়নে কোন টেকসই বেড়িবাঁধ ছিলনা, ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত শুনলেই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের ভয় পেতো। আমরা ছিলাম ঝাঁঝাভরের মতো। আজ রায়পুর ইউনিয়নে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ হয়েছে, প্রতিটি বাড়ির সড়ক আরসিসি ঢালাইসহ হয়েছে কার্লভার্ট নির্মাণও। অল্প সময়ের মধ্যে ৩৭০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে এখানে, বাকি কাজও আমরা চলমান রেখেছি।

তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে ও স্থানীয় সাংসদ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা পরিষদের নতুন ভবনও পেয়েছি। আধুনিক রায়পুর ইউনয়িন পরিষদ ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজও কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। সব সম্ভব হয়েছে আমাদের অভিভাবক সাবেক সফল ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির প্রচেষ্টায়। আগামীতে মডেল রায়পুর ইউনিয়নের অঙ্গীকার নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলা যুবলীগের সদস্য মো. জালাল উদ্দীন জানান, ২৯ এপ্রিল দিনটি আসলেই আমরা এখনও শিউরে উঠি। এ দিনে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী এলাকায় বসবাসরত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত হয়েছেন আত্মীয় স্বজন অনেকেই। সে আঘাতে বিলীন হয়ে গেছে অনেকের বসতভিটা ও কবরস্থান। সেদিন থেকে এলাকার মানুষের দাবী টেকসই বেঁড়িবাঁধের। আজ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির প্রচেষ্ঠায় বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার এটি বাস্তবে রূপ দিয়েছে। এখন আমরা রায়পুরবাসী সুরক্ষিত। রায়পুরের মানুষ এখন আর ঘুর্ণিঝড়কে ভয় করে না।

এদিকে ১৯৯১ সালের এইদিনকে স্মরণ করে ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় প্রতি বছর ২৯ এপ্রিল ঘরে-ঘরে মিলাদ মাহফিল, কোরআনখানি, দোয়া কামনা, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরনসহ বিভিন্ন আয়োজনে দিনটি পালন করে আনোয়ারা উপকূলীবাসী।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।