আরাফাতসহ ১৪ প্রতারকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আমেরিকা প্রবাসী মোহাম্মদ বাবুল মিয়ার নাম ব্যবহার করে কোম্পানী গঠন, ব্যাংক হতে কোটি কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ, ফ্ল্যাট বিক্রয় করে বিভিন্ন লোকদের নিকট থেকে অর্থ আত্মসাতের মামলায় ১৪ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বুধবার (১০ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে এই আদেশ দেন।

বাদীর পক্ষের আইনজীবী ফয়সাল নূর জানান, মোঃ আরাফাত ও মোঃ মোমেনসহ অন্যান্য আসামীরা আমার মক্কেল বয়োবৃদ্ধ আমেরিকা প্রবাসী মোহাম্মদ বাবুল মিয়া দেশে না থাকা সত্ত্বেও তার নাম ব্যবহার করে চট্টগ্রাম নগরীতে সিটি স্ক্যাপ প্ল্যানার্স লিমিটেড নামে ভুয়া ডেভেলপার কোম্পানী গঠন করে। পরবর্তীতে তার ব্যাংক হতে কোটি কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন লোকজনের কাছে ফ্ল্যাট বিক্রয় করে প্রায় ৩ কোটি টাকা অর্থ আত্মসাত করে। তাদের বিরুদ্ধে বাদী মামলা করলে ১৪ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

মামলার আসামিরা হলো-মোঃ আরাফাত, মোঃ মোমেন, শিহাব উদ্দিন, মোহাম্মদ নাজমুস সাকিব, মাহবুবুর রহমান, এএসএম রফিকুল ইসলাম, এসএম সাইফুল ইসলাম, মোহাররামুল কবির, পিযুষ চন্দ্র রায়, সুরাইয়া বেগম, মোহাম্মদ শাহজাহান, জেসমিন মান্নান, শাহরিয়ার মাহমুদ, রাশেদ হোছাইন।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, বাদী মোহাম্মদ বাবুল মিয়া দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় স্থায়ীভাবে আমেরিকায় বসবাস করছেন। তার অনুপস্থিতিতে আসামীরা তার নাম ব্যবহার করে সিটি স্ক্যাপ প্ল্যানার্স লিমিটেড নামে ভুয়া ডেভেলপার কোম্পানী ও বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্ট খুলে বেশ কয়েকটি অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে। আসামীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি ক্রয়-বিক্রয় এবং জমিতে সুউচ্চ ইমারত নির্মাণের পরিকল্পনা করে ফ্ল্যাট বিক্রয়ের জন্য বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে বিক্রয়ের লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারন মানুষকে আকৃষ্ট করে। তারা প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। আসামীরা বাদীকে এই ভুয়া কোম্পানীর কখনো চেয়ারম্যান, কখনো ব্যবস্থাপনা পরিচালক বানিয়েছেন। আসামীরা ফ্ল্যাট ক্রয়ক্রেতাদের কাছে ফ্ল্যাটের দখল বুঝিয়ে না দেয়ায় এবং গৃহীত ঋণ পরিশোধ না করায় বাদী সহ আসামীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে মামলা দায়ের করে।

আরো জানা যায়, বাদী দেশে বেড়াতে আসলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি বিষয় জানতে পেরে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পিবিআই (মেট্রো), চট্টগ্রাম মামলার তদন্ত করে বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করে ৭০৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দেয়। জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ এন্ড ফারমস এর বিভাগীয় অফিস এবং জুবিলি রোডের যমুনা ব্যাংকের কাগজপত্রসহ বাদীর টিপ ও সাক্ষর পরীক্ষা করে চট্টগ্রাম সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরির হস্তলিপি বিশারদের মতামতের প্রেক্ষিতে বাদীর ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আসামীরা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বাদীর সাক্ষর নিজেরা দিয়ে সিটি স্ক্যাপ প্ল্যানার্স লিমিটেড ডেভেলপার কোম্পানী গঠন, ব্যাংক হতে ঋণ গ্রহণ, ফ্ল্যাট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন লোকদের নিকট হতে অর্থ আত্মসাত করেছে। এসব ঘটনায় বাদীর কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।