উন্নয়নের জন্য জাবেদকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান এলাকার মানুষ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এবার টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করছে আওয়ামী লীগ। নতুন সরকারের ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়ে ইতিমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। তবে সেই তালিকা থেকে সদ্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বাদ পড়ায় চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম-১৩ আনোয়ারা-কর্ণফুলীর সাধারণ জনগণ। সেই সাথে সফল ভূমিমন্ত্রীকে নতুন সরকারের যেকোন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব দেওয়া হবে—এমন আশায় বুক বাঁধছেন দুই অঞ্চলের সাধারণ মানুষসহ হাজারও নেতাকর্মী।

উপজেলার গুয়াপঞ্চকের বিধবা নারী দিলোয়ারা বেগম বলেন, বাবুমিয়ার ছেলে মন্ত্রী থাকায় আমাদের আশপাশের সড়ক পাকা, অন্ধকার এলাকায় লাগিয়েছে লাইট। হয়েছে উন্নয়ন। শুনলাম এবার মন্ত্রী হয়নি, শুনার পর থেকে মনটা খারাপ হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি জোর দাবি জানাই তাকে যেন যথাযথ মূল্যায়ন করেন।

বৈরাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোয়াব আলী বলেন, আমরা এখনও বিশ্বাস করি জননেত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চয় যথাযথ মূল্যায়ন করবেন। মাঠ পর্যায়ের মানুষের দাবী নতুন সরকারের মন্ত্রী করা হোক। তাঁকে মন্ত্রীত্বের আসনে স্থান দেওয়া হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এ অঞ্চলের সকল মানুষকেই মূলত সম্মানিত করা হবে।

বারশতের চেয়ারম্যান এম.এ কাইয়ূম শাহ্ বলেন, বিগত পাঁচ বছরে ভূমিমন্ত্রীর সহযোগিতায় গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন ও পারকি সমুদ্র সৈকতের ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। একজন মন্ত্রী হিসেবে নয়, তিনি আনোয়ারা-কর্ণফুলীকে নিজের বাড়ি মনে করতেন। তাঁর এই কাজে তিনি মানুষের মাঝে আজীবন বেঁচে থাকবেন।

আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, তিনি সারাদেশের মন্ত্রী হওয়ার পরও প্রতি সপ্তাহে দুইদিন এলাকায় সময় দিতেন। দলবল নির্বিশেষে মানুষের পাশে থাকতেন এবং গ্রামের যেকোন মানুষই তাঁর সঙ্গে সরাসরি বা মুঠোফোনে কথা বলতে পারতেন। এটাই অনেক বড় কথা। ভূমি মন্ত্রণালয়কে ডিজিট্যাল ও দুর্নীতি মুক্ত করার কারণে সারাদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এতে আমাদের আশা ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁকে আবারো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রাখবে। কিন্তু নতুন মন্ত্রী পরিষদের তালিকায় তাঁর নাম না দেখে আমরা হতাশ। আশা রাখি প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষকে এই হতাশ মুক্ত করতে আমাদের অভিভাবক হিসেবে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ মহোদয়কে মন্ত্রী পরিষদে রাখবেন।

নতুন মন্ত্রী পরিষদ থেকে বাদ পড়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেই সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা। প্রধানমন্ত্রী আমাকে একবার ভূমি প্রতিমন্ত্রী করেছেন এরপর পূর্ণমন্ত্রী করেছেন। এতে আমার আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার অভিভাবক, তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন আমার মঙ্গলের জন্য নেবেন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ আরও বলেন, আগে মন্ত্রী ছিলাম, এলাকার মানুষকে সপ্তাহে দুইদিন সময় দিয়েছি। এখন প্রতি বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার তিনদিনই এলাকার মানুষের সঙ্গে সময় কাটাব। রাজনীতি করি মানুষের ভালবাসার জন্য। আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আমার প্রয়াত পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর আদর্শে উজ্জীবীত হয়ে রাজনীতিতে এসেছি। বাবা শিখিয়ে গেছেন কিভাবে মানুষের পাশে থেকে সেবা করতে হয়। আমার কাছে মন্ত্রী এমপির চেয়ে আমার এলাকার মানুষ বড়। আমার জীবন আমি এলাকার মানুষের জন্য উৎসর্গ করলাম।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।