ঋণখেলাপি সম্রাট ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা ঘুরাচ্ছেন এক যুগ! গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছাতা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ছিদ্দিক ট্রেডার্স। চট্টগ্রামের পাশাপাশি দেশের সিংহভাগ ছাতার চাহিদা মেটাতো এই প্রতিষ্ঠান। ২০০৭ সালের দিকে খাতুনগঞ্জে ভোগ্য পণ্য ব্যবসা শুরু করেন ছিদ্দিক ট্রেডার্সের বর্তমান কর্ণধার আবু সাঈদ চৌধুরী সম্রাট। বাবার প্রতিষ্ঠিত ছিদ্দিক ট্রেডার্সের সুনামকে পুঁজি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা নেয় আবু সাঈদ। একে একে ১৫টি ব্যাংক থেকে ঋণ নেন সম্রাট। পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়া ভোগ্যপণ্য আমদানির পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাসের সেই ঋণে ডুবতে বসেছে সিদ্দিক ট্রেডার্স। যা সুদ-আসলে এখন দেড় হাজার কোটি টাকা।

এবার ডাচ বাংলা ব্যাংকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আবু সাঈদ চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান। রোববার (১১ জুন) আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বলেন জানান অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো. রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, মেসার্স সিদ্দিক ট্রেডার্সের প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাঈদ ফুডস লিমিটেডের কাছ থেকে ৬ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার আট টাকা ৩১ পয়সা পাওনা আদায়ে ২০১৩ সালে অর্থঋণ মামলা দায়ের করে ডাচ বাংলা ব্যাংক। তা বর্তমানে ১২ শতাংশ সুদসহ ১১ কোটি ৯১ লাখ ৭৬ হাজার ১০১ দশমিক ৪০ টাকা। ক্রোকাবদ্ধ সম্পত্তি বিক্রয়ের জন্য দুই বার নিলামে তুলেও বিক্রি করা যায়নি। সাঈদ ফুডস বার বার সময়ের আবেদন করেও টাকা পরিশোধ না করায় মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী উত্থাপিত ঋণখেলাপিদের তালিকায় আবু সাঈদ চৌধুরী সম্রাটের নাম দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত ছিদ্দিক ট্রেডার্সের কাছে অগ্রণী ব্যাংক লালদীঘী শাখার ২৫০ কোটি টাকা, যমুনা ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার ৭২ কোটি টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার ৬১ কোটি টাকা, ব্রাক ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ১১৩ কোটি টাকা, ওয়ান ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখা ৮৭ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংকের লালদীঘী শাখার ৭৬ কোটি টাকা, এনসিসি ব্যাংক আন্দরকিল্লা শাখার ৪৯ কোটি টাকা, প্রাইম ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার ৪১ কোটি টাকা।

এছাড়াও সিটি ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার সাড়ে ২১ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়া খাতুনগঞ্জ শাখার সাড়ে ১২ কোটি টাকা, ইউসিবিএল আন্দরকিল্লা শাখার ১২ কোটি টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার ১১ কোটি টাকা, ডাচ্ বাংলা ব্যাংক সিডিএ শাখার সাড়ে ৬ কোটি টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ৬ কোটি টাকা ছাড়াও ঢাকা ব্যাংক জুবলী রোড শাখার পাওনা ছিল।
সুদাসলে এই পাওনা বেড়ে বর্তমানে দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।