এস আলমের চিনির গুদামে আগুনে পোড়া বর্জ্য গড়াচ্ছে কর্ণফুলীতে

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে আগুন লাগার একদিন পার হলেও গুদামের ভেতরে এখনও জ্বলছে আগুন। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ড। আগুন বাহিরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভবনা না থাকলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই থেকে তিনদিন সময় লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক আবদুর রাজ্জাক।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গুদামে পানি দেওয়ার পর পুরো কারখানা এলাকায় গলিত চিনির কালো প্রলেপ ছড়িয়ে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ক্লান্ত হয়ে পড়ে দায়িত্ব বদল করে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। গুদামের ভেতর জ্বলছে আগুন।

এদিকে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে চিনির কাঁচামালের আগুনে পোড়া বর্জ্যেগুলো কারখানার ড্রেন দিয়ে যাচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে। এতে করে পরিবেশ দূষণের আশষ্কা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেল ৪টায় লাগা আগুনে ধোঁয়াও বের হচ্ছে এখনও। এছাড়া আগুন লাগা পরিস্থিতিকে পুঁজি করে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে একরাতে বেড়ে গেছে চিনির দাম। গত সোমবার রাত থেকে খুচরা বাজারে চিনির দাম ১৪০ টাকা নিলেও মঙ্গলবার ১৪৫-১৫০ টাকা করে চিনি বিক্রি করছে বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেন।

কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চিনিকলটির পাঁচটি গুদাম রয়েছে। প্রতিটি গুদামের ধারণ ক্ষমতা ৬০ হাজার মেট্রিক টন। কারখানার এক নম্বর গুদামে আগুন লাগে। আগুন লাগার সময় কারখানার উৎপাদন চালু ছিল। এ সময় কারখানাটিতে প্রায় সাড়ে ৫শ শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করছে। আগুন লাগার পর কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঘটনার পর থেকে কারখানার মালিক পক্ষের লোকজন ও বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।

এ ঘটনা তদন্তে নয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সার্বিক ও ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা। মঙ্গলবার দুপুরে কর্ণফুলীর ইছানগর গ্রামে অবস্থিত কারখানা পরিদর্শন করেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপক (এমডি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (কমার্সিয়াল) মো. আখতার হোসেন বলেন, কারখানার একটি গুদামে আগুন লাগলেও আরও ৪টি গুদাম অক্ষত রয়েছে। তাই দু’একদিনের মধ্যে পুরোদমে উৎপাদনে ফিরে আসতে পারব আমরা। আশা করি বাজারে চিনির দামে প্রভাব পড়বে না।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।