চট্টগ্রামে পত্রিকা সম্পাদকের বাড়িতে ‘হামলা-লুটপাট’, কেয়ারটেকারকে বেঁধে মারধর

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মাদার্শা গ্রামে দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সম্পাদক হোসাইন তৌফিক ইফতিখারের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা ও দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সন্ত্রাসীরা বাড়ির দেয়াল টপকে জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে কেয়ারটেকারকে বেঁধে ফেলে। পরে তাকে মারধর করে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

সাংবাদিক হোসাইন তৌফিক ইফতিখার বলেন, ‘বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বাড়ির সীমানা দেয়াল টপকে ৬ জনের সংঘবদ্ধ একদল সন্ত্রাসী জানালার গ্রিল কেটে আমার বাড়িতে ঢোকে। এ সময় ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী ওই ছয় সন্ত্রাসীর মুখ কালো মুখোশে ঢাকা ছিল। ঘরে ঢুকেই তারা অস্ত্রের মুখে বাড়ির কেয়ারটেকারের হাত-পা বেঁধে ফেলে।

এ সময় তারা, সাংবাদিক তৌফিক কোন্ রুমে আছে—সেটা জানতে চায়। কেয়ারটেকার বাড়ির সদস্যদের সবাই চট্টগ্রাম শহরে চলে গেছেন—এমন কথা জানানোর পর সন্ত্রাসীরা বাড়ির প্রতিটি কক্ষ তল্লাশি করে। ফেরার সময় আলমারিতে থাকা এক ভরি স্বর্ণ, নগদ ৪০ হাজার টাকা ছাড়াও বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়।’

এদিকে ঘটনার ১৪ ঘন্টা পর সাতকানিয়া থানার একজন উপপরিদর্শক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

স্থানীয়রা বলছেন, সাতকানিয়া উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে হামলা, ডাকাতি-দস্যুতা ও লুটপাটের ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন চরম অবনতি ঘটলেও মূল অপরাধীরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এজন্য পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করছেন এলাকাবাসী।

দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে, এসব ঘটনায় সাতকানিয়া থানার পুলিশ হামলা ও ডাকাতির মামলাও নিতে চায় না। ভুক্তভোগীরা মামলা করতে গেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেসব ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

এর আগে, গত ৮ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে পার্শ্ববর্তী এওচিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম গাটিয়াডেঙ্গা নেয়ামত আলী পাড়ায় এক নৃশংস হামলার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন একই পরিবারের চার সদস্য—দিলুয়ারা বেগম (৫৫), আবুল হাসেম (৬৫), মনোয়ারা বেগম (৫০) ও সিফাতুল ইসলাম (২৪)। সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে এ সময় পুরো এলাকায় নেমে আসে আতঙ্ক।

সর্বশেষ বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে সাতকানিয়ার খাগরিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড জলদাস পাড়া রাধাকৃষ্ণ মন্দির এলাকায় বাসন্তী পূজার আরতি চলাকালে প্রতিমা ভাংচুর ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। দুর্বৃত্তদের হামলায় এ ঘটনায় এক মহিলাসহ তিন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন— ওই এলাকার সহদেব জলদাসের স্ত্রী কৃষ্ণা জলদাস (৩২), অর্জুন জলদাসের ছেলে সুজন জলদাস (২৫) ও তার ভাই শিপন জলদাস (১৭)। আহতরা পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।