চট্টগ্রামে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আবারও সংবাদকর্মীর ওপর হামলা

চট্টগ্রামে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের স্টাফ ক্যামেরাপারসন সেলিম উল্লাহ।
রোববার (২০ এপ্রিল) রাত সোয়া দশটার দিকে নগরীর মনসুরাবাদ ডিবি অফিসের পাশে ঘটনাটি ঘটে। সেখানে স্থানীয় যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন ও তার অনুসারিদের সাথে প্রতিপক্ষের সংঘর্ষ বাধে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে।

হামলার শিকার সেলিমের ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনা চলাকালে তিনি ভিডিও ধারণ করছিলেন। এসময় তার ওপর হামলা চালায় সাদ্দাম হোসেন এবং তার অনুসারীরা। এসময় মারতে মারতে তাকে নিয়ে যায় পাশের একটি খালি জায়গায়। সেখানে মারধর ও অকথ্য ভাষায় গালাগালির একপর্যায়ে সেলিমকে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয়দের তৎপরতার মুখে পিছু হটে সাদ্দাম বাহিনীর সদস্যরা। ফলে প্রাণে রক্ষা পান সেলিম। সন্ত্রাসীরা তার ভিডিও ধারণ করা মোবাইলটি ভেঙে ফেলে।

পরে চট্টগ্রাম মেডিকেলে জরুরি বিভাগে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয় সেলিমকে। তার চোখে এবং পায়ের লিগামেন্টে আঘাত লেগেছে। হামলার ঘটনায় রাতেই মামলা হয় ডবলমুরিং থানায়। এরপর ডবলমুরিং জোনের এসি ও থানার ওসির নেতৃত্বে দ্রুত অভিযানে নামে পুলিশ। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এখনো পলাতক রয়েছে মূলহোতা সাদ্দাম হোসেন।

ডবলমুরিং থানার ওসি ফজলুল কাদের পাটোয়ারী জানান, সাদ্দাসহ পলাতক অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

মনছুরাবাদ এলাকায় ফুটপাতে অবৈধ ফার্নিচার মার্কেট গড়ে তোলা সাদ্দাম কিশোর গ্যাংয়ের লিডার বলে জানান স্থানীয়রা। শুধু ফুটপাত নয় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিশাল জায়গা দখলে নিয়ে গড়ে তুলেছেন ফার্নিচারের গোডাউন। তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলতেও ভয় পান স্থানীয়রা।

এসব সন্ত্রাসীর দাপটের কাছে অসহায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও। তা প্রতিবাদতো দূরের কথা উল্টো ভয়ে থাকেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকশিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে জঙ্গি হামলার রায়ের ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে যমুনা টিভির দুই সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছিলেন। লালদীঘি মাঠে যুবলীগের সমাবেশ কভার করতে গিয়েও সাংবাদিকরা হেনস্তার শিকার হন।

সর্বশেষ চট্টগ্রামের নন্দিত সাংবাদিক হোসাইন তৌফিক ইফতিখারের গ্রামের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।গত ১৭ এপ্রিল দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা গ্রামে হোসাইন তৌফিক ইফতিখারের বাড়িতে ঢুকে কেয়ারটেকারের হাত-পা বেঁধে মালপত্র লুটপাট করে। এ সময় তারা কেয়ারটেকারের কাছে সাংবাদিক তৌফিকের অবস্থানও জানতে চায়। তিনি বাড়িতে নেই—এমন কথা জানার পরও তারা প্রতিটি কক্ষ তল্লাশি করে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।