চট্টগ্রামে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ-পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত, গ্রেপ্তার ২

চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করার অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামিকে ১৩ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার নগরীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার(২৯ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-০৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) তাপস কর্মকার।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কয়ৈতা বেগম (শেফালী) এবং তার স্বামী আব্দুর শুক্কুর (৫০)। শুক্কুর চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার মালুরা এলাকার মৃত ইসলাম ভূইয়ার ছেলে। তারা পাঁচলাইশ থানা এলাকায় বসবাস করতেন।

র‌্যাব জানায়, ভুক্তভোগী (১৯) একজন গার্মেন্টসকর্মী এবং নগরীর পাঁচশাইশ এলাকায় তার মা-বাবার সাথে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। কর্মস্থালে আসা-যাওয়াকালীন বখাটে সিদ্দিক (ডিবি সিদ্দিক) তার বন্ধুদের নিয়ে ভুক্তভোগীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। পরবর্তীতে বখাটে সিদ্দিক বিবাহ করবে বলে আশ্বস্ত করে ভুক্তভোগীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন।

২০১০ সালের ১৩ অক্টোবর রাত আনুমানিক ১০টার দিকে আব্দুর শুক্কুর ও কয়ৈতা বেগমের সহযোগীতায় বখাটে সিদ্দিক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগীকে মুহাম্মদপুরস্থ একটি বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় সিদ্দিকের পরিবারের কোন সদস্যকে দেখতে না পেয়ে কারণ জিজ্ঞাসা করলে ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি এবং বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে বিয়ের প্রস্তুতির কথা বলে পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন আটকে রেখে জোরপূর্বক ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে।

এদিকে ভুক্তভোগীর সন্ধান না পেয়ে তার পরিবার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকে। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর কর্মস্থলের বান্ধবী ও আশপাশের লোকজনের তথ্যানুযায়ী সিদ্দিকের বাসায় গিয়ে ভুক্তভোগীর খোঁজে পাওয়া যায়। সে সময় ভুক্তভোগীকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে শুক্কুর ও কয়ৈতা বেগম বাধা দেয়। পরে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের সহায়তায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা সেই বছরের অক্টোবর মাসে বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে আসামিরা গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্নস্থানে পালাতে থাকে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করলে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আদালত আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

র‌্যাব-০৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) তাপস কর্মকার, মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত ছিলো। র‌্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।