চবিতে সাংবাদিক হেনস্তার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন, সহপাঠীদের ক্লাস বর্জন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পেশাগত দায়িত্বপালনকালে ছাত্রলীগ কর্তৃক সাংবাদিক হেনস্তার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এর সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারী) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বর এলাকায় এ যৌথ মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তাঁদের হাতে, ‘রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভে আঘাত কেন?’ ‘প্রশাসন জবাব চাই, অপরাধীদের চেনা যায় শাস্তি তবু দেয়া দায়।’
শিক্ষার্থীরা এসময় ৩ দিনের মধ্যে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
এছাড়া উপস্থিত মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা হুমকিদাতাদের বিচারের আওতায় নিয়ে না আসা পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন৷ তারা বলেন, কিছুদিন আগে আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থী মারজান আক্তারকে তার পেশাগত দায়িত্বপালনকালে ‘তোর নিরাপত্তা কে দেয় দেখব’ মর্মে হুমকি দেয়া হয়েছে৷ হুমকিদাতারা এখনও ক্যাম্পাসেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পরিস্থিতি এমন যে তাকে হুমকিদাতারা যেকোনো সময় যেকোনো কিছু করে ফেলতে পারে। এমতাবস্থায় তাকে নিরাপত্তাহীনতায় রেখে আমরা ক্লাস করতে পারি না। তাই আমরা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি।

এসময় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাংবাদিক স্বাধীনভাবে কাজ করবে এবং নানা সমস্যা ও অনিয়মগুলোকে তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের দিকে নিয়ে যাবে। কিন্তু ক্যাম্পাসের একজন নারী সাংবাদিক যদি তার কাজ করতে গিয়ে এ ধরণের বাধার সম্মুখিন হয়, আমার এটা পুরো বাংলাদেশের সাংবাদিকতা প্রশ্নবিদ্ধ। এজন্য আমি প্রশাসনের নিকট দাবি জানাব, এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে এসে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করে গণমাধ্যম কর্মীরা। শিক্ষার্থীদের সুখ-দু:খ ও হাসি-কান্নার সঙ্গী সাংবাদিকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাবনার গল্পের পাশাপাশি সব অনিয়ম ও দুর্নীতির খবরও উঠে আসে সাংবাদিকদের কলমে৷ পেশাগত দায়িত্বপালনকালে সাংবাদিকদের বাধা প্রদান করা মানে ক্যাম্পাসের ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর টুটি চেপে ধরা। আমরা আজকের এই আন্দোলনে সংহতি জানাচ্ছি এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি রওশন আক্তার, সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা করিম, সহযোগী অধ্যাপক ড. শহীদুল হক, সহকারী অধ্যাপক সুবর্ণা মজুমদার, সহকারী অধ্যাপক খন্দকার আলী আর রাজী, সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিম, সহকারী অধ্যাপক রাজীব নন্দী।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।