ছাত্র আন্দোলনের সময় অডিও ফাঁস—বিএনপির খসরু ও ব্যারিস্টার নওমির বিচার শুরু

বিশেষ ক্ষমতা আইনে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরে দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১২ জুন) চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আমিনুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দিয়েছেন। এ সময় আদালতে অভিযুক্ত দুই আসামি উপস্থিত ছিলেন।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩)এ চার্জ গঠন হয়েছে। মামলার এজাহার অনুযায়ী এই ধারায় চার্জ গঠনের সুযোগ নেই। আমরা আদালতে আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছি। অভিযোগ গঠনের জন্য পর্যাপ্ত ডকুমেন্ট না থাকার পরও আদালত চার্জ গঠন করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত হয়। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই বছর ৪ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফোনালাপের ওই অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। এটি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মিলহানুর রাহমান নাওমির ফোনালাপ বলে অভিযোগ উঠে।

ছাত্র আন্দোলনের সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অডিও কথোপকথনের সূত্রে চলমান ছাত্র আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে দাবি করে ২০১৮ সালের ৪ আগস্ট চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আসামি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। পরে মামলায় ব্যারিস্টার নওমিকে যুক্ত করা হয়।

অপরদিকে ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার দেউরা গ্রাম থেকে মিলহানুর রাহমান নাওমিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর ব্যারিস্টার নওমিকে ঢাকা দায়ের হওয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের একটি মামলায় ৫ দিন এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনের অপর মামলায় ৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ।

রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছি, ব্যারিস্টার নওমি ৪ আগস্ট ২০১৮ বেলা ৩টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদের সঙ্গে ফোনালাপ করেন। ওই ফোনালাপে নেতাকর্মীদের ও চার-পাঁচশ জন ছেলে নিয়ে কুমিল্লায় হাইওয়েতে আন্দোলন না করে ঢাকায় এসে ঢাকা অচল করে দিতে বলা হয়। উক্ত নির্দেশ পাওয়ার পর নাওমি অজ্ঞাতনামা আসামিদের নিয়ে ঢাকায় এসে শাহবাগ এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর করে।

ছাত্রলীগ নেতা জাকারিয়া দস্তগীরের দায়ের করা মামলা তদন্ত করে ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। অভিযোগপত্রে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি উল্লেখ করা হয়। তবে টেলিফোনে কথোপকথনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এবং অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।