জন্মগতভাবে হার্টের ত্রুটিযুক্ত শিশুদের ‘আশার আলো’ চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হসপিটাল

বাংলাদেশের প্রতি হাজারে প্রায় ৮-৯ জন শিশু হৃদপিণ্ডের ছিদ্রজনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন। বয়সের সাথে সাথে এ সমস্যা প্রকট হতে থাকে। যার ফলে অসংখ্য শিশুর ভবিষ্যৎ জীবন কাটে চরম অনিশ্চয়তায়। তবে জন্মগতভাবে হার্টের ত্রুটিযুক্ত শিশুদের আশার আলোয় পরিণত হয়েছে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম। প্রতিষ্ঠানটির শিশু হৃদরোগ বিভাগের কল্যাণে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন অনেক শিশু। এবার হসপিটালটির প্রতিষ্ঠাতা ও শিশু হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. তাহেরা নাজরীনের তত্ত্বাবধানে ও দক্ষ মেডিকেল টিমের প্রচেষ্টায় আরও ৪ শিশুর দেহে সফলভাবে আধুনিক ডিভাইস দ্বারা হার্টের ছিদ্র বন্ধের চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে।

সুস্থ হওয়া এসব শিশুরা হলেন—আহনাফ (১ বছর), ফাতেমা (২ বছর), বিবি আয়েশা (৪ বছর) এবং মাশরেখাইন (৫ বছর)। তাদের মধ্যে আহনাফ তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগত, ফাতেমা একসময় অত্যন্ত স্বল্প ওজন নিয়ে বার বার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতো। সকলেই এখন সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন লাভ করেছে। এছাড়া মাশরেখাইন এবং বিবি আয়েশাও ফেলছেন স্বস্তির নিঃশ্বাস।

চট্টগ্রাম এভারকেয়ার সূত্রে জানা গেছে, হসপিটালটির ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড ইন্টারভেনশনাল পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রখ্যাত শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাহেরা নাজরীন একটি স্বল্প খরচের প্যাকেজের আওতায় পেটেন্ট ডাক্টাস আর্টেরিওসাস (পিডিএ) ডিভাইসগুলো বসিয়ে এই শিশুদের জীবনে আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন। এর ফলে শিশুরা সকল বিপত্তি কাটিয়ে আবার স্বাভাবিক জীবন পেয়েছে। তাদের উজ্জ্বল হাসি-ই প্রমাণ করে তারা কতটা সমস্যা ও ঝুঁকি অতিক্রম করেছেন।

এভারকেয়ার হসপিটালস বাংলাদেশের এমডি এবং সিইও ডা. রত্নদীপ চাসকার বলেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই ডিভাইসগুলো কেবল যন্ত্র নয়, প্রত্যেকটি এক একটি বেঁচে থাকার আশা। চিকিৎসা শেষে প্রতিটি শিশুর উচ্ছ্বাস ও উষ্ণতা আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াস যোগায়।

জীবন পরিবর্তনকারী এই উদ্যোগের পেছনের ব্যক্তিত্ব হৃদয়ের বীর ডা. তাহেরা নাজরীন শিশুদের জন্মগত হার্টের ত্রুটির চিকিৎসায় দেশের অন্যতম অভিজ্ঞ চিকিৎসক। তিনি তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, এই ৪টি শিশুকে আবার স্বাভাবিক জীবনের স্বাদ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। তাদের সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিতে আমি এবং এভারকেয়ার পরিবার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিস্থিতিটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক যখন হার্টের জটিলতায় একটি শিশু কষ্ট পায় এবং অর্থের অভাবে তার বাবা-মা যখন উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে না পারে। এইসকল দামী ডিভাইসের খরচ বহন করা সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলোর সাধ্যের বাইরে।

তিনি বলেন, এভারকেয়ারের এই উদ্যোগটি সম্পর্কে সকলকে জানান যাতে করে আমরা সুবিধাবঞ্চিত এই পরিবারগুলোর সহায়তা নিশ্চিত করতে পারি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে জীবন পরিবর্তনকারী কিছু পদক্ষেপ ও আর্থ-সামাজিক পটভূমিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে যাচ্ছে এভারকেয়ার হসপিটাল। প্রতিষ্ঠানটির এই নিত্যনতুন সাফল্যগুলো বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। উন্নত কার্ডিয়াক সেবা সকলের সামনে নিয়ে এসে হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর ভবিষ্যত নিশ্চিতে এভারকেয়ারের পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি বিভাগ সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম, বন্দর নগরীর সর্বপ্রথম ৪৭০ শয্যাবিশিষ্ট মাল্টি ডিসিপ্লিনারী সুপার-স্পেশিয়ালিটি টারশিয়ারি কেয়ার হসপিটাল। এখানে আছে সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘন্টা চালু আছে জরুরী বিভাগ। এছাড়াও সর্বাধুনিক আইসিইউ সেবা এবং ২৭টি বিশেষ ও উপ-বিশেষ বিভাগ যা পুরো অঞ্চলের ধারণক্ষমতার শূন্যস্থান পূরণে সক্ষম।

৪ লক্ষ ৯২ হাজার বর্গফুট আয়তনের উপর নির্মিত হসপিটালটিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ মেডিকেল সেবা ও পাঁচ শতাধিকেরও বেশি মেডিকেল প্রোফেশনালসদের সাথে নিয়ে চট্টগ্রামের সকল স্তরের রোগীদের সর্বোচ্চ মানের সেবা নিশ্চিতে বদ্ধ পরিকর।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।