তলাবদ্ধ ফ্ল্যাট টার্গেট করে জানালার গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ, ২ সিঁধেল চোর গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং মডেল থানাধীন এলাকায় অভিযানে চালিয়ে পেশাদার সিঁধেল চোর চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যারা বন্ধ থাকা বিভিন্ন ফ্ল্যাট টার্গেট করে পাশাপাশি ভবনের সাহায্যে জানালার গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে চুরির কাজ চালাতো।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ডবলমুরিং জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মুকুর চাকমা। গত ১২ অক্টোবর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে চুরির কাজে ব্যবহৃত সরাঞ্জম এবং চোরাই মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. জুয়েল এবং মো. রুবেল। তাদের কাছ থেকে চোরাইকৃত একটি ল্যাপটপ, একটি ট্যাব, ২টি মোবাইল ফোন, একটি চুলের আয়রন মেশিন, চুরির জন্য গ্রিল কাটায় ব্যবহৃত একটি রেঞ্চ এবং ঘটনার সময় জুয়েলের গায়ে পরিহিত টি- শার্ট উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গত ১১ অক্টোবর রাত ৯টায় গৃহকর্ত্রী মনোয়ারা বেগম বেবি ডবলমুরিং মডেল থানাধীন মনছুরাবাদ এলাকার নিজ ভাড়াবাসা তালাবদ্ধ করে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যান। বিয়ের অনুষ্ঠানে শেষে রাত ১১টার দিকে বাসায় ফিরে এসে দরজার তালা খুলে বাসায় প্রবেশ করতে গেলে গৃহকর্ত্রী বুঝতে পারেন দরজাটি বাসার ভেতর থেকে লাগানো। তিনি দরজায় ধাক্কা দিয়েও দরজা খুলতে ব্যর্থ হয়ে ৩য় তলায় থাকা তার স্বজনদের ডাকেন। স্বজনরা এসে সজোরে ধাক্কা দিলে এক পর্যায়ে দরজার ভিতর থেকে লাগানো ছিটকানি ভেঙ্গে দরজা খুলে যায়। ভিতরে প্রবেশ করে তারা দেখতে পান, কাপড়-চোপড় এলোমেলোভাবে পুরোঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ঘরে থাকা আলমারি, ওয়্যারড্রব খোলা। এক পর্যায়ে দেখা যায় একটি জানালার গ্রিলের কিছু অংশ নেই।

গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়- তারা প্রথমে ভবনের মূল সিঁড়ি বেয়ে ভবনের বিভিন্ন তলায় গিয়ে দেখে কোন ফ্ল্যাটের দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ কি-না। বিভিন্ন তলা পরিদর্শন করে তারা দেখতে পান ৪র্থ তলার ফ্ল্যাটটির দরজায় তালা লাগানো। বাসার ভিতরে কোন ব্যক্তি আছে কি-না তা যাচাইয়ের জন্য কলিং বেল চাপেন। কিন্তু ভিতর থেকে সাড়া না পেয়ে তারা নিশ্চিত হয় ভিতরে কেউ নেই। দরজার তালা ভেঙে প্রবেশ করলে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের লোকজনের কাছে ধরা পড়ার আশংকায় তারা ঠিক করে ফ্ল্যাটের সামনে দিয়ে নয়, বরং পিছনের জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশ করাই অধিক নিরাপদ। এর প্রেক্ষিতে তারা পাশাপাশি ঘেঁষে থাকা দুই ভবনের দেয়াল বেয়ে উঠে জানালার গ্রিল কেটে এই ঘরে প্রবেশ করে এই চুরির ঘটনা ঘটায়।

সিএমপির ডবলমুরিং জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মুকুর চাকমা বলেন, ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে কোন সিসিটিভি ক্যামেরা ছিলো না । কিন্তু আশেপাশের অন্যান্য ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে কয়েকজন সন্দেহভাজনের গতিবিধি বিশ্লেষণ করে চিহ্নিত করে ঘটনায় জড়িত চোর চক্রকে শনাক্ত করা হয়। পরে ডবলমুরিং থানার একটি চৌকস দল সিঁধেল চোর চক্রের সক্রিয় ঘটনার পরদিন ১২ অক্টোবর গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃত জুয়েলের বিরুদ্ধে শরিয়তপুরের গোসাইরহাট থানা এবং সিএমপির ডবলমুরিং মডেল থানায় সিঁধেল চুরির ২টি মামলা রয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।