থেমে গেলো পাহাড়ের চারণ সাংবাদিক পলাশের জীবন

জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে শেষাবধি জেতা হলো না সাংবাদিক পলাশ বড়ুয়ার। হাজারো মানুষের আকুতি, প্রার্থনা আর প্রতীক্ষাকে উপেক্ষা করেই যেনো ওপাড়ে পাড়ি জমালেন সবুজ পাহাড়ের চারণ এক সংবাদকর্মী! হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে সেই যে জ্ঞান হারালেন আর ফিরলই না সেই প্রাণ। মাত্র ৪৫ বছরেই থমকে গেলো এক বোহেমিয়ান প্রান্তিক সাংবাদিকের জীবন।

দুইদিন আগে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় কয়েকজন শুভার্থীসহ বেড়াতে এসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন পলাশ। তাৎক্ষণিক তাকে ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে পাঠানো হয় চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামেও চিকিৎসকরা তার জ্ঞান ফেরাতে ব্যর্থ হলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখানে আইসিইউ হয়ে পাঠানো হয় শমরিতা হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে। অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়া বুধবার সন্ধ্যায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পলাশ।

তার স্বজন রূপায়ন বড়ুয়া মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করে জানিয়েছেন পলাশের মৃতদেহ রাতেই ঢাকা থেকে তার বাড়ি দীঘিনালার উদ্দেশ্যে রওনা হবে। সেখানেই ধর্মীয় ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে দাহ করা হবে। ঢাকায় পলাশের মৃতদেহের সাথে থাকা সংবাদকর্মী অপু দত্তও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাংবাদিক পলাশ বড়ুয়া শুরু থেকেই প্রথম আলোর সাথে জড়িত ছিলেন, তিনি বর্তমানে তিন পার্বত্য জেলায় পত্রিকাটির একমাত্র উপজেলা প্রতিনিধি। পেশার প্রতি বরাবরই কমিটেড পরিশ্রম তাকে নিজ পেশায় নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। সাংবাদিকতার পাশাপাশি নানান সামাজিক কাজের সাথে হড়ি হয়ে তিনি হয়ে উঠেন পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকতার অন্যতম আইকন। প্রায় প্রতিদিনই ছবি বা সংবাদে প্রথম আলোর পাতা জুড়ে ছিলো তার প্রানবন্ত উপস্থিতি।

মিশুক-সদালাপি পলাশ হয়ে উঠেছিলেন পাহাড়ের গণমানুষের প্রিয় সাংবাদিক। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।
তিনি পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার প্রথম আলোর প্রতিনিধি ছিলেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।