দলের পদধারী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলা মাথায় রাখতে হবে—তথ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, নির্বাচনে সবসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল, থাকে এবং অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিতও হয়। তবে আমাদের দলের যারা পদধারী স্বতন্ত্র প্রার্থী, তাদেরকে অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলা মাথায় রাখতে হবে।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৭ আসনে (রাঙ্গুনিয়া-বোয়ালখালী আংশিক) আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের কাছে কয়েকজন দলীয় নেতাকে সাথে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। এরপর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের এসব বলেন মন্ত্রী।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, দেশে নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরী হয়েছে। সারাদেশে এখন নির্বাচনী আমেজ বইছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মনোনয়ন ঘোষণা করেছে, এবং তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছে। ৪৪ টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। এর বাইরেও অনিবন্ধিত অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। ৭ জানুয়ারি যথাসময়ে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা যেটি তৈরী হয়েছে, এতে বিএনপি হতাশ হয়ে গেছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচনের জন্য প্রার্থীতা ঘোষণা, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা, মনোনয়নপত্র জমা দেয়া এগুলোর মাধ্যমে আসলে পুরো দেশ আজকে নির্বাচনী আমেজের মধ্যে আছে। এই ডামাঢোলের মধ্যে বিএনপি-জামাতের নির্বাচন বর্জনের যে ডাক সেটি হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। মানুষ এখন নির্বাচনমূখী হয়ে গেছে।
বিএনপি গতকাল বলেছেন, কয়েকদিনের মধ্যে সরকারের পতন হবে, এবিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, বিএনপি এখন দৈব-দূর্বিপাকের উপর নির্ভর করছে। দেশে তারা এধরণের ঘোষণা দিয়ে নিজেদেরকে হাস্যকর করে তুলেছে। সরকারের পতন নিয়ে তো বহুদিন ধরে বিএনপি দিনক্ষণ ঘোষণা করে।

তিনি বলেন, বিএনপি বলে, অমুক দিন সরকারের পতন হবে। গতবছর ৩০ ডিসেম্বর দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল। এবছর ২৮ অক্টোবরও দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল। এভাবে ঘোষণাটাই একটি সন্ত্রাসী ঘোষণা। এমন যে তারা কোন দৈব-দূর্বিপাকের উপর নির্ভর করে বলে, অমুকদিন কিছু একটা হবে। যেমনটা, অমুকদিন বৃষ্টি হবে, অমুকদিন বজ্রপাত হবে, অমুক সময়ে সাইক্লোন হবে। বিএনপির ঘোষণাও ঠিক সেইরকম।

বিএনপির পক্ষ থেকে বিদেশী থাবার যে কথা বলা হচ্ছে সে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়েও বিদেশী থাবা ছিল, আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতির সময়েও বিদেশী থাবা আছে। এখন যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তখনও বিভিন্ন দেশি-বিদেশী চক্র নানা ষড়যন্ত্র করছে। তবে, আমাদের সাথে সবার সম্পর্ক চমৎকার।
তিনি বলেন, আমাদের সরকারের নীতি হচ্ছে, কারো সাথেই বৈরিতা নয়, সবার সাথে মিত্রতা। সেই নীতি নিয়েই আমরা কাজ করি। আমাদের সাথে সমস্ত দেশের ভালো সম্পর্ক। আমরা আমাদের সমস্ত উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগীতা নিয়ে দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যেতে চাই।

এসময় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চিশতি, বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ডা. মোহাম্মদ সেলিম, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, আবদুল মোনাফ সিকদার, এমরুল করিম রাশেদ, গিয়াস উদ্দিন খান স্বপন, মুজিবুল ইসলাম সরফি, ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।