দুঃসময়ের মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী দিলোয়ারা ইউসুফকে সংসদে দেখতে চায় তৃণমূল

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে দীর্ঘ এক যুগ ধরে দায়িত্ব পালন করছেন দলের তৃণমূল থেকে উঠা আসা নেত্রী দিলোয়ারা ইউসুফ। ২০১৩ সালের ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সম্মেলনে এই পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দলের ‘কঠিন-দুঃসময়ে’ একনিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই সময়ে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে উত্তর জেলায় দলের প্রার্থীদের বিজয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন মহিলা আওয়ামী লীগের এই নেত্রী।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বারবার নির্বাচিত সদস্য দিলোয়ারা ইউসুফ বর্তমান মেয়াদেও রাউজান, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও চসিক (আংশিক) ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছেন। এই ওয়ার্ডে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে বর্তমানে জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি শুরু করে তৃণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসা এই নেত্রীকে এবার জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দেখতে আগ্রহী দলের চট্টগ্রামের সংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। দলের দুঃসময়ে ভূমিকা রাখা এবং দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেত্রী হিসেবে এবার প্রধানমন্ত্রী তাকে মূল্যায়ন করবেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে আভাস মিলেছে। সৎ, রাজপথের পরিশ্রমী ও ক্লিন ইমেজের প্রবীণ রাজনৈতিক নেত্রী হিসেবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে দিলোয়ারা ইউসুফ এগিয়ে আছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

জানা গেছে, দিলোয়ারা ইউসুফের পরিবারের সবাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের রাজনীতি আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত। তাঁর স্বামী মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক ইউসুফ সিকদার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম কলেজে প্রতিবাদ মিছিল থেকে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘ কারাবরণ করেন।
দিলোয়ারা ইউসুফ ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি হাটহাজারীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালের অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্বাচনে মহিলা কমিটির অন্যতম ‘সমন্বয়ক’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সংগঠক হিসেবে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন।
তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে চট্টগ্রাম জেলা বঙ্গবন্ধু মহিলা পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ ১৫ বছর দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে কাজ করেন এবং ২০১৩ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি সভানেত্রী নির্বাচিত হন। সেই থেকে অদ্যাবধি দায়িত্বে থেকে উত্তর চট্টগ্রামে তৃণমূল পর্যায়ে মহিলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন শিক্ষা ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত।

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী দিলোয়ারা ইউসুফ বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই জাতির পিতার আদর্শের রাজনীতি করছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে, চট্টগ্রাম মহানগর ও উত্তর জেলায় মহিলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে কাজ করেছি। রাজনৈতিক জীবনের ধারাবাহিকতায় আমাদের জন্য সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল ওয়ান ইলেভেনের দিনগুলো। সেই সময়ে নেত্রীর মুক্তি ও দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে রাজপথে জীবনে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছি। রাজনীতিই আমার জীবনের মানবকল্যাণের ব্রত। দলের নেতাকর্মীদের ইচ্ছেতে আগেও মনোনয়ন চেয়েছি, এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী এবার আমার বিষয়টি বিবেচনায় রাখবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।