নানা আয়োজনে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন করলো জেলা প্রশাসন

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসকে ঘিরে ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।

১৭ মার্চ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তেলন ও ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবটির শুভ সূচনা হয়। সকাল ৯টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক।

সকাল সাড়ে ৯ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শিশুদের নিয়ে কেক কেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন। এরপর চিত্রাঙ্কন, হাতের লেখা, নৃত্য, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সংগীতানুষ্ঠান, পুস্তক ও ছবি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

বিকেল সাড়ে ৪টায় সার্কিট হাউস থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি এমএ আজি স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে গিয়ে শেষ হয়।

বিকেল পৌণে ৫টায় বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে ‘মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলা-২০২২’ এর শুভ উদ্বোধন করা হয়। বিকেল ৫টায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ, পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু।

নানা আয়োজনে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন করলো জেলা প্রশাসন 1

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, বাঙালী জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্ছনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী প্রতিটি বাঙালীর কাছে আনন্দের ও গৌরবের। মুজিব শতবর্ষ থেকে আরম্ভ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন প্রতিটি বাঙালীকে গৌরবদীপ্ত ও আনন্দিত করে। জাতির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলো শিশুদের সামনে তুলে ধরা উচিত। শিশুরা জানবে তাদের অতীত। শিশুদের জানানো উচিত আমরা এ স্বাধীন দেশ রক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছি। স্বাধীনতার পর জাতির জনকের জীবিতাবস্তায় ১৩৪টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এসময় জাতির জনকের রাজনৈতিক ও বাঙ্গালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন তিনি।

নানা আয়োজনে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন করলো জেলা প্রশাসন 2

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, জাতির পিতা ছিলেন সাহসী, সৎ ও দেশপ্রেমিক নেতা। তিনি সবসময় দেশের মানুষের কথা বলতেন। দেশের মানুষের জীবন-মান উন্নয়নের কথা চিন্তা করতেন। বঙ্গবন্ধুর মতো সাহসী নেতা পেয়েছিলাম বলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল- মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর উপর রচনা ও ৭ মার্চের ভাষণের উপর প্রতিযোগিতা, জেলা শিল্পকলা ও শিশু একাডেমিতে চিত্রাঙ্কন, হাতের লেখা, নৃত্য ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গানের প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ, বিভিন্ন মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠান, শিশু সদন, শিশু পরিবার ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর উপর বিভিন্ন পুস্তক ও ছবি প্রদর্শন।

এছাড়াও সন্ধ্যা থেকে সার্কিট হাউস, বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।