পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড, স্বামী বলছে আত্মহত্যা

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ থেকে আয়শা আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের নুর মোহাম্মদ ফরিক বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত আয়শা ওই এলাকার মাহফুজুল ইসলামের (২৭) স্ত্রী। আয়শা আক্তারের আহমেদ রেজা নামে ১০ মাসের এক পুত্র সন্তান রয়েছে।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত আয়শা আক্তার পরিবারের লোকজন অজান্তে বসতঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁছিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন।

৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার নাছির উদ্দিন বলেন, লাশ উদ্ধারের ঘটনা শুনে আমি তৎক্ষণাৎ ওই বাড়িতে যায়। গিয়ে দেখি সবাই লাশ ধরাধরি করে নিচে নামিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আয়শা আক্তার বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ শুনেছি। সে মানসিকভাবে কিছুটা সমস্যায় ভুগছিলেন।

নিহত আয়েশার স্বামী মাহফুজুল ইসলাম বলেন, বাচ্চা হওয়ার পর থেকে সে কিছুটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। ইতোমধ্যে তাকে আমরা ডাক্তার দেখিয়েছি যার প্রেসক্রিপশনগুলো আমরা পুলিশের কাছে জমা দিয়েছি। প্রতিদিনের মতো সে আজও স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা নিয়ে খেলাধুলা করছিল। সে আমাকে বাচ্চা দিয়ে দ্বিতীয় তলায় উঠে। উঠার পাঁচ মিনিট পরে আমার মায়ের চিৎকার শুনি আমরা সকলেই উপরে উঠি। আমার সাথে সাথে আমাদের আশেপাশের পরিবারের প্রায় সবাই উঠে এবং সকলে ঝুলন্ত অবস্থায় থেকে ধরে তাকে নিচে নামিয়ে আনে। পরবর্তীতে একজন স্থানীয় ডাক্তারকে ডেকে দেখালে তিনি মারা গেছেন বলে জানান।

কেন এমনটা করল সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি যার জন্য সে আত্মহত্যা করবে। তবে কেন এমনটা করেছে সে বিষয়টি আমাদের অজানা।

নিহতের ভাই আবুল ফয়েজ চট্টগ্রাম খবরকে জানান, এটা আত্মহত্যা নয়। বোনকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বেশ কিছুদিন ধরে ৭০ থেকে ৮০ জনের দাওয়াত খাওয়া নিয়ে আমার বোনকে জ্বালা যন্ত্রণা করছিল। যার উপর ভিত্তি করে তারা আমার বোনকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলেও আখ্যা দিয়েছে। এছাড়াও দাওয়াত না খাওয়ানোতে এখনো পর্যন্ত আয়েশার শাশুড়ি এবং ননদরা আমাদের বাড়িতে আসেনি।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তার ভাই বলেন, মামলা করতে আমরা থানায় গেছিলাম। কিন্তু থানা থেকে বলা হয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া হত্যা মামলা করা যাবে না।

পুলিশ উপ-পরিদর্শক রফিক বলেন, আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

এমএফ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।