পাহাড়ের পাদদেশে আশ্রয়ন প্রকল্প—সবুজের বুকে লালের ছোঁয়া

চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার পশ্চিমে আলমপুর ও আদর্শগ্রাম। পাহাড়ের দিগন্তজুড়ে সবুজের ভাঁজে ভাঁজে গড়ে উঠেছে নিরাশ্রয় দরিদ্রদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্প। দূর থেকে দেখে মনে হবে সবুজ ভূমিতে লাল রঙে আলপনা এঁকেছেন কোনো এক শিল্পী।

পাহাড়ি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের এই ঘরগুলো মানুষের দৃষ্টি কাড়ে। অপরদিকে ঘর পেয়ে আনন্দিত অসহায়, হতদরিদ্র ভূমি ও গৃহহীন পরিবার।

গত ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনকালেই দেশবাসীর দৃষ্টি কেড়েছিল প্রকল্পটির রূপ-সৌন্দর্য্য। পাহাড়ি সবুজের মাঝে লাল টিনের ঘর, প্রতিটি ঘরে সাদা ও লাল-সবুজের মিথস্ক্রিয়া। এ যেন বাংলাদেশের গর্বের লাল-সবুজের মিলিত প্রয়াস। দূর থেকে দেখলে মনে হবে কোনো পর্যটন স্পট। এই কর্মযজ্ঞ তত্ত্বাবধান করছেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মোঃ শাহিদুল আলম।

তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে হাটহাজারীতে ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে প্রথম ধাপে ১৫টি ঘর, দ্বিতীয় ধাপে ১০টি ঘর ও তৃতীয় ধাপের প্রথম পর্যায়ে ২৪টি ঘর এবং তৃতীয় ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬০টি ঘর প্রদান করা হয়েছে। এভাবে মাথা গুঁজার নতুন ঠিকানা পেল ১০৯ পরিবার। এসব প্রকল্পে পানি-বিদ্যুৎ সুবিধা, ইবাদত খানা, বিদ্যালয়, নারীদের প্রশিক্ষণের জন্য কমিউনিটি হল থেকে শুরু করে একটি শহরে যেমন সুযোগ-সুবিধা থাকে তার সবই থাকবে। সরকারের প্রতিটি বিভাগ এখানে সমন্বিতভাবে কাজ করেছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রায়হান বলেন, ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এ স্লোগান নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে ভূমি ও গৃহহীনদের ২ শতাংশ খাসজমিতে আধাপাকা নতুন ঘর দেওয়া হয়েছে। সাথে সাথে তাদেরকে নিজেদের নামে ওই ভূমির মালিকানা কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

হাটহাজারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আহসানুর হক বলেন, হাটহাজারীতে আশ্রয়ণ প্রকল্প গুলোচমৎকার লোকেশনে। চারদিকে সবুজ প্রকৃতি ঘেরা। এবার আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৬০টি ঘর দেয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫ শত টাকা খরচে মোট ৬০টি ঘরে ১ কোটি ৫৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখানে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হয়েছে। গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। সঙ্গে একটি পুকুর খনন করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পুকুরে মাছ চাষের জন্য মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছ লাগানো হবে। এক কথায় যত ধরনের নাগরিক সুবিধা শহরের মানুষ পায় তা এখানে করা হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।