ফ্রিল্যান্সারের টাকা হাতানো ৬ পুলিশ বহিষ্কার, মূলহোতার কাছে চাওয়া হয়েছে ব্যাখ্যা!

চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সারকে আটক করে তার বাইন্যান্স একাউন্ট থেকে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ছয় সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।
বহিষ্কৃত ছয় পুলিশ সদস্য হলেন-উপপরিদর্শক মো. আলমগীর হোসেন, মো. বাবুল মিয়া, সহকারী উপপরিদর্শক মো. শাহ পরাণ জান্নাত, মইনুল হোসেন, কনস্টেবল জাহিদুর রহমান ও আব্দুর রহমান।
কিন্তু ওই ঘটনার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ যার বিরুদ্ধে সেই পরিদর্শক রুহুল আমিনের কাছে ঘটনার ব্যখ্যা তলব করা হয়েছে।

বৃহষ্পতিবার (১৪ মার্চ) চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) স্পিনা রানী প্রমাণিক গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনা তদন্তে সিএমপি তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছিল। তাদের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একজন পরিদর্শকের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। বাকি ছয়জনকে সাময়িক বহিষ্কার করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করতে বলা হয়েছে।’

ঘটনার নেতৃত্ব দেওয়া পরিদর্শক রুহুল আমিন কী তাহলে বিভাগীয় মামলা ও সাময়িক বহিষ্কার আদেশের বাইরে থাকছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে স্পিনা রানী প্রমাণিক বলেন, ‘তেমন নয়। এটি একটি পদ্ধতিগত ব্যাপার। তার কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। ব্যাখ্যা পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন গুলবাগ আবাসিকের থেকে মো. আবু বক্কর সিদ্দিকসহ দুইজনকে তুলে নিয়ে যায় ডিবির একটি দল। আবু বক্কর সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার। পরদিন তাকে অনলাইন জুয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে একটি নন এফআইআর মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আদালত তাকে ১০০ টাকা জরিমানা করে মুক্তি দেন। মুক্তির পর আবু বক্কর সিদ্দিক অভিযোগ করেন ধরে নেওয়ার পর নানা ভয়ভীতি দেখি ডিবি তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করে। পাশাপাশি তার বাইন্যান্স একাউন্ট থেকে তিন কোটি টাকা সমমূল্যের বিটকয়েন সরিয়ে নেয়।

এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ হলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করে লাইনে সংযুক্ত করা হয়। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করে সিএমপি। গত বৃহষ্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। প্রতিবেদনে আবু বক্করের অভিযোগের সত্যতার কথা উঠে আসে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।