বকেয়া পরিশোধের আশ্বাসে চমেকে কিডনি ডায়ালাইসিস চালু

সীতাকুণ্ড থেকে নিজের ডায়ালাইসিস করাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে এসেছেন তাহিনা আফরিন (২৮)। হাটহাজারী থেকে ছেলের কিডনি ডায়ালাইসিস করাতে এসেছেন মো. আকবর আলী। তিনি গত দুই বছর ধরে এখানেই নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাচ্ছেন তার ছেলের।

কিন্তু বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে এসে দেখেন ডায়ালাইসিস সেন্টারে ঝুলছে তালা। ফলে ছেলেকে নিয়ে শংকায় পড়েন আকবর আলী, বিপাকে পড়েন তাহিনা আফরিনের মতো শতাধিক রোগী।

এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী কিডনি রোগীরা শুরু করেন বিক্ষোভ। রোগীদের আন্দোলনের মুখে প্রায় ছয় ঘন্টা পর খুলে দেয়া হয় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর ডায়ালাসিস সার্ভিস (প্রা.) লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে থাকা কিডনি ডায়ালাসিস সেন্টারটি।

প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. হিমেল আচার্য্য বলেন, আমাদের গত দুই বছরে প্রায় ২৩ কোটি টাকা বকেয়া রয়ে গেছে। টাকার অভাবে আমরা ডায়ালাসিস সরঞ্জাম কিনতে পারছিনা। ফলে রোগীদের সঠিকভাবে চিকিৎসা দিতে পারছিনা বলে বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, জরুরীভিত্তিতে নিজস্ব লোকবল দিয়ে দুপুর তিনটার দিকে জটিল রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু করেছি। দেড় ঘণ্টা পর অন্যান্য রোগীদেরও সেবা দেয়া শুরু হবে।

এদিকে ডায়ালাসিস সেন্টার চালু হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে রোগীদের মাঝে। মো. আইয়ুব রানা নামের এক রোগী বলেন, সকাল সাড়ে সাতটায় এসেছি ডায়ালাইসিস করাতে। এখানে গত চার বছর ধরে কিডনি ডায়ালাসিস করাচ্ছি। এভাবে হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় আমরা গরীব রোগীরা অসহায় হয়ে পড়েছি।

পাবলিক পার্টনারশিপে ডায়ালাইসিস সেন্টার পরিচালনা করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর। সরকারের কাছে ২৩ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে স্যান্ডরের। গত ২ জানুয়ারি একইভাবে নোটিশ দিয়ে বন্ধ করার ঘোষণা দিলেও ৪ জানুয়ারি সাত দিনের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের আশ্বাসে পুনরায় সেবা চালু রাখে কর্তৃপক্ষ।

তবে সেই আশ্বাস পূরণ না হওয়ায় এবার একেবারেই ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ করে দেয় স্যান্ডর কর্তৃপক্ষ। যা পুনরায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে চালু করা হয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।