চট্টগ্রাম বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশে আসার পথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের স্থিরচিত্র সম্বলিত ট্যাম্পার্ড, গ্লাস, ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে শান্ত চট্টগ্রাম হঠাৎ উত্তাল হয়ে উঠছে।
ঘটনার পর থেকেই প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ। এসব কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছেন নগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
বুধবার (১৪ জুন) বিকেলে বিএনপির সমাবেশে চান্দগাঁও থেকে আসা মিছিলের নেতাকর্মীরা ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের স্থিরচিত্র সম্বলিত ট্যাম্পার্ড, গ্লাস, ম্যুরাল ভাঙচুর করে। এই ঘটনায় চারিদিকে নিন্দার ঝড় ওঠে।
সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে হাজির হন। এসময় তার সঙ্গে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চসিক কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনি, নগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনসহ নগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আ জ ম নাছির উদ্দীন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান এবং যে কোনো অপশক্তিকে রাজপথে মোকাবেলা করার ঘোষণা দেন।
বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্ত্বরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ মানববন্ধনের আয়োজন করে। নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ মানববন্ধনে মেয়র বলেন, একাত্তরের পরাজিত সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার অংশ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র ভাংচুর করেছে। মেয়র এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এরপর নগর যুবলীগের নব নির্বাচিত সভাপতি মাহবুবুল হক সুমন ও দিদারুল আলম দিদারের নেতৃত্বে নগর যুবলীগ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এসময় বক্তারা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। যে কোনো পরিস্থিতিতে যুবলীগ চট্টগ্রামের জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে সকল প্রকার অপশক্তির মোকাবেলার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেন।
নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দোস্তগীরের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে জামালখান মোড়ে এসে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তারা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
এছাড়াও চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ জামালখান এলাকায় দিনের বিভিন্ন সময় খণ্ড খন্ড বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
অপর দিকে এই ঘটনায়, নগরীর চকবাজার ও কোতোয়ালী থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। কোতোয়ালী থানায় দায়ের করা মামলায় নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, নগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ ৭৮ জনের না উল্লেখ করে ১২০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
চকবাজার থানায় নগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশাসহ ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।