বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামাগার—ন্যায়কুঞ্জ, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন

রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে আগত বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ লাগবে ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নামে বিশ্রামাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন।
রোববার (২৫ জুন) সকালে এ বিশ্রামাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা ও দায়রা জজ, বিচারক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক, পিপি, আইনজীবীগণ ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ ও গণমাধ্যম কর্মীরা।

বিচারপতি বোরহান উদ্দিন অনুষ্ঠানের শুরুতে তার বক্তব্যে বলেন, গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যার নেতৃত্বে স্বাধীন হয়েছে আমাদের এই মাতৃভূমি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে জনগণের বিচারপ্রাপ্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কোনো নাগরিক যাতে আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বিচারপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত না হয় এবং দ্রুততম সময়ে স্বচ্ছতার সাথে বিচারিক সেবা পায় সেজন্য সরকার নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করছে।

তিনি বলেন, বিচার প্রাপ্তির জন্য বিপুল সংখ্যক বিচারপ্রার্থীকে প্রতিনিয়ত আদালত প্রাঙ্গণে যাতায়াত করতে হয়। নিম্ন আদালতের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পেলেও প্রায় সকল অধস্তন আদালতের এজলাস কক্ষ/বিচার কক্ষের আসন সীমিত হওয়ায় আইনজীবী ব্যতীত বিচারপ্রার্থীদের বসার তেমন কোনো সুযোগ হয় না। ফলে বিচার কার্যক্রম শুরুর আগে ও পরে বিচারপ্রার্থীদের আদালতের বারান্দায় কিংবা খোলা আকাশের নীচে বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়। এতে তাঁদের নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যার মুখোমুখি হন নারী, অসুস্থ ব্যক্তি এবং শিশুদের মায়েরা। এই সংকট সমাধানে এবং বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি দেশের প্রতিটি জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীগণের বিশ্রামগার নির্মাণের অভিপ্রায় জ্ঞাপন করেন। এই “ন্যায়কুঞ্জে” বিচারপ্রার্থী বসার স্থান, বৈদুত্যিক ফ্যান, খাবারের দোকান ও স্টেশনারী, টয়লেট এবং শিশু যত্নকর্ণারের ব্যবস্থা থাকবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গনে আগত বিচারপ্রার্থী জনসাধারনের ভোগান্তি লাঘব হবে। এর ফলে আদালত প্রাঙ্গনে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হবে এবং সেবাগ্রহীতাদের জন্য প্রদত্ত সেবার মান আরো উন্নত হবে। এ সময় তিনি বিচারকদের সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান।

রাঙামাটি গণপূর্ত বিভাগের বাস্তবায়নে ৪৮ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৫ কোটি ২৫ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা। বিভিন্ন জেলায় সেবা গ্রহীতাদের চাহিদা অনুযায়ী এই প্রকল্পটিকে দুইটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে যার মধ্য একটি হলো এ টাইপ যার আয়তন ১ হাজার বর্গফুট এবং অন্যটি বি টাইপের যার আয়তন ৮০০ বর্গফুট।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।