বিজয়ের এক দিন আগে হানাদারমুক্ত হয় রাঙ্গুনিয়া

আজ ১৫ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হায়েনাদের দখল থেকে মুক্ত হয়েছিল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে হানাদার বাহিনী রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিতে শুরু করে।

এ উপজেলায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল রাঙ্গুনিয়া আদর্শ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, রাণীরহাট উচ্চবিদ্যালয়, পোমরা উচ্চবিদ্যালয় ও কর্ণফুলি নদীর তীরে বন বিভাগের সরফভাটার চিরিঙ্গা বন বিট কার্যালয়। ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সদস্যরা এসব ঘাঁটি থেকে তল্পিতল্পা নিয়ে নীরবে সরে পড়ে।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা অশোক মিত্র কারবারির নেতৃত্বে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে কোদালা চা-বাগান, শিলক, পদুয়া ও সরফভাটার পাহাড়ি এলাকায় হানাদার বাহিনীর ঘাঁটিগুলো লক্ষ করে চতুর্দিকে অবস্থান নেন মুক্তিযোদ্ধারা।

ওই দিন দিবাগত রাতে মুক্তিযোদ্ধারা ঘাঁটিগুলোতে চারদিক থেকে একযোগে আক্রমণ চালান। ফলে পরদিন ১৫ ডিসেম্বর তারা রাঙ্গুনিয়া ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। সকালে মুক্তিযোদ্ধারা ঘাঁটিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাধীনতাকামী মানুষ রাঙ্গুনিয়ায় বিজয় মিছিল বের করে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কমান্ডার খায়রুল বশর মুন্সী বলেন, ১৪ ডিসেম্বরের অভিযানে হানাদার বাহিনীর শতাধিক সৈন্য গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। তাদের মৃতদেহ কর্ণফুলী নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি অন্য সৈন্যরা ভোরে ক্যাম্প ছেড়ে চট্টগ্রাম শহরের দিকে পালিয়ে যাওয়ার সময় কয়েক শ ঘরবাড়ি ও বাজারের দোকানপাট আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ওই দিন সংঘর্ষে আবদুস ছোবহান, মতিউর রহমান, বিপুল দাশ, ফণী মহাজন, মোহন বাঁশি, রাতুল বড়ুয়া, বাবুল মুৎসুদ্দি, সায়ের আহমদ, নাজের শাহ, আবুল কাসেম, বশির আহমদ, দৌলত মিয়াসহ প্রায় ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা মারা যান।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।