ভরণপোষণের টাকা আনতে গিয়ে লাশ হলেন মোহছেনা

বিধবা মোহছেনা আক্তার (৩৭) দ্বিতীয় সংসার পেতেছিলেন স্বামীর বন্ধু রিদুয়ানের সাথে। মাত্র সাত মাসের মাথায় রিদুয়ান থেকে ভরণপোষণের টাকা আনতে গিয়ে লাশ হলেন মোহছেনা। মোহছেনার ছেলের দাবী রিদুয়ানের ফোন পেয়ে মোহছেনা ঘর থেকে বের হয়েছিলেন। একদিন পর পুলিশ হাত-পায়ের রগ কাটা অবস্থায় মোহছেনার লাশ উদ্ধার করেছে। পেটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ছুরিকাঘাতও ছিল বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা কক্সবাজারের পেকুয়া সদরের নুইন্যামুইন্যা ব্রিজ বিল থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করেন পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলি।

তিনি বলেন, স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে আজ দুপুরে আমরা মোহছেনার লাশ উদ্ধার করেছি। তার বাম হাত ও দুই পায়ের রগকাটা ছিল। পেটে ছুরিকাঘাত ছিল। আলামত হিসেবে আমরা ছুরিটি উদ্ধার করেছি। তার ব্যবহৃত মোবাইল, ভ্যানিটি ব্যাগও পড়ে ছিল অদূরে। ব্যাগে কিছু টাকাও ছিল।

নিহত মোহছেনার ছেলে আরিফ জানান, গতকাল সোমবার দুপুরে রিদুয়ান আমার মাকে ফোন করে টাকা আনতে যেতে বলেন। এরপর দুপুর ২টার দিকে মা টাকার জন্য কোনখালীর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। আজ পুলিশের ফোনে জানতে পারি আমার মায়ের মৃতদেহ পেকুয়া সদরের নুইন্যামুইন্যা ব্রিজ সংলগ্ন বিল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহত মোহছেনা কক্সবাজার পৌরসভার খাজা মঞ্জিল এলাকার ছাবের আহমদের মেয়ে। তার প্রতিবেশীরা জানান, মোহছেনার স্বামী মালেশিয়ায় থাকতেন এবং গত বছর তিনি সেখানেই মারা যান। রিদুয়ানের সাথে তার মালেশিয়ায় পরিচয় হয় এবং সুসম্পর্ক ছিল। ৭ মাস আগে ছোট পরিসরে পারিবারিকভাবে রিদুয়ানের সাথে মোহছেনার বিয়ে হয়েছে। মোহছেনা রিদুয়ানের বাড়িতে কখনো থাকেনি। রিদুয়ান মোহছেনাকে ভরণপোষণের খরচ দিতেন এবং কক্সবাজার সদরের তার বাসায় এসে থাকতেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, নিহতের স্বজনদের দেওয়া তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রিদুয়ানের স্ত্রীর সাথে পুলিশ কথা বলেছে। স্ত্রীর বরাতে তিনি বলেন, রিদুয়ানের আরেকটা স্ত্রী ছিল। সেটা রিদুয়ান তালাক দিয়েছেন। মোহছেনার সাথে বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত নয়।

জানা গেছে, রিদুয়ানের যে স্ত্রীর সাথে পুলিশ কথা বলেছে সেটিও রিদুয়ানের দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীর বাপের বাড়ির যৌতুকের টাকায় রিদুয়ান মালয়েশিয়া গিয়ে তাকে তালাক দিয়েছিল। মালয়েশিয়ায় থাকতেই বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে দেশে এসে বিয়ে করেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।