ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হচ্ছে আনোয়ারা—হাটহাজারী উপজেলা

চট্টগ্রাম জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন আরও ২৪৪টি পরিবার জমিসহ ঘর পাচ্ছেন বুধবার (৯ আগস্ট)। এর মাধ্যমে চট্টগ্রামের ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হচ্ছে আনোয়ারা—হাটহাজারী উপজেলা। এর আগে পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বোয়ালখালী ও রাউজান উপজেলাকে প্রশাসন ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করেছে।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে তুলে ধরেন। চট্টগ্রাম জেলার ৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে ২৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় মোট জমিসহ ঘরপ্রাপ্ত পরিবারের সংখ্যা দাড়াবে ৫ হাজার ১৯২টি।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টে শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ সকল শহীদদের স্মরণ করে লিখিত বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত নবীন দেশে ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নোয়াখালী সফরে গিয়ে আশ্রয়হীনদের প্রথম পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার পর দেশে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের মতো জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো স্থবির হয়ে যায়। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যার দীর্ঘ ২১ বছর পর জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ১ম বার সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে আশ্রয়হীনদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি অর্থায়নে প্রথম উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করেন “আশ্রয়ণ প্রকল্প”।

তিনি আরও বলেন, ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর সুযোগ্য তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর স্বপ্নের এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বাসস্থান নিশ্চিতের ঘোষনা দেন। সরকারি উদ্যোগে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমি ও গৃহ প্রদানের এ নজির পৃথিবীর বুকে অনন্য।

“মুজিবশতবর্ষে একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়নে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারা বাংলাদেশে ১ম পর্যায়ে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, ২য় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৩০টি, ৩য় পর্যায়ে ৫৯ হাজার ১৩৩ টি ও ৪র্থ পর্যায়ের (১ম ধাপে) ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। অর্থাৎ অশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে ইতোমধ্যে পুরো বাংলাদেশে সর্বমোট ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছেন।

চট্টগ্রাম প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় ১ম পর্যায়ে ১ হাজার ৪৪৪টি, ২য় পর্যায়ে ৬৪৯টি, ৩য় পর্যায়ে ১ হাজার ৯৬২ টি ও ৪র্থ পর্যায়ের (১ম ধাপে) ৮৯৩টি সহ সর্বমোট ৪ হাজার ৯৪৮টি ভূমিধান ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৪র্থ পর্যায়ে (২য় ধাপে) আগামী ৯ আগস্ট সারাদেশে ২২ হাজার ১০১ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জনিসহ বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। এর মধ্য দিয়ে সারাদেশে মোট জমিসহ ঘরপ্রাপ্ত পরিবারের সংখ্যা দাড়াবে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১টি।
চট্টগ্রাম জেলার ৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে ২৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় মোট জমিসহ ঘরপ্রাপ্ত পরিবারের সংখ্যা দাড়াবে ৫ হাজার ১৯২টি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।