মাছ শিকারের দ্বন্দ্বে শাহেদ হত্যা—৩ খুনির আমৃত্যু কারাদণ্ড

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় থানার ভাসা জাল বসিয়ে মাছ শিকারের দ্বন্দ্বে মোহাম্মদ শাহেদ হত্যাকাণ্ডের মামলায় তিন ভাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডিত তিন খুনি হলো—আনোয়ারা উপজেলার শিলাইগড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ড খলিল মেম্বাবের নতুন বাড়ীর মৃত আলি আহমেদের তিন ছেলে হারুন রশিদ (৪০), জাহেদ হোসেন টন্টু (৩২) ও আনোয়ার হোসেন (৩৬)।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের ৭ম অতিরিক্ত দায়রা জজ আ.স.ম. শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালত এই রায় দেন বলে জানান মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী। ২০১৩ সালের ১ জুলাই মোহাম্মদ শাহেদের বাড়ির পাশের বিলে আসামি জাহেদ হোসেন ভাসা জাল বসিয়ে মাছ শিকার করতে তাকে শাহেদ বাধা দেয়। এই নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে জাহেদ তার দুই ভাই হারুন ও আনোয়ারকে ডেকে এনে একসঙ্গে ধারালো কিরিচ, দা ও লোহার রড দিয়ে শাহেদের ওপর হামলা করে। এক পর্যায়ে হারুন দা দিয়ে শাহেদের মাথায় কোপ দেয়।

তিনি আরও বলেন, আহত শাহেদের চিৎকারে প্রতিবেশী-স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন। চমেক হাসপাতালে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আইসিইউ প্রয়োজন হলে চমেক হাসপাতালে খালি না থাকায় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২ জুলাই সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহেদের মৃত্যু হয়।

শাহেদের মৃত্যুর ঘটনায় হারুন, জাহেদ ও আনোয়ারকে আসামি করে শাহেদের চাচা মো. ইউনুছ আনোয়ারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলায় ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এই রায় দেন।

রোববার রায়ের সময় জাহেদ হোসেন টন্টু ও আনোয়ার হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলো। তাদের সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর পলাতক হারুন রশিদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।