মাদক ও চোরাই স্বর্ণের টাকা ভাগাভাগিতে খুন হয় সুমন—গ্রেপ্তার ৩

রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় মাদক ও চোরাই স্বর্ণের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সুমন সাহা হত্যার ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো—মফিজুর রহমান দুলু, মোঃ মামুন ও নুর হাসান রিটু।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস. এম ওবায়েদুল হক। তিনি বলেন, ভিকটিম সুমনকে কোতোয়ালী থানাধীন রিয়াজউদ্দিন বাজার আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী রোড মুরগীহাটা লেইনস্থ সুপার মার্কেট ২য় তলা মুজিবুল হকের ঘরে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে লোহার রড, পাইপ, লোহার প্লাস দিয়ে এলোপাতাড়ী মারধর করে হত্যা করা হয়। এরপর আমরা হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাই।
তিনি আরও বলেন, সুমনের মামার দেওয়া বর্ণনার ভিত্তিতে ভিকটিমকে হত্যাকারী আসামী দুলু, মামুনদেরকে সনাক্ত করা হয়। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২৭ নভেম্বর দিবগত রাতে কোতোয়ালী থানাধীন রিয়াজউদ্দিন বাজার, জামালখান ও হেমসেন লেইন, আসকারদিঘীর পাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি ওবায়দুল আরও বলেন, আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়—ভিকটিম সুমন দীর্ঘদিন ধরে আসামি দুলুর রিয়াজউদ্দিন বাজারস্থ ভাড়াকৃত রুমে আসা যাওয়া করত এবং সেখানে গিয়ে তারা সবাই একসাথে মাদক সেবন করে, আড্ডা দেয়। আসামী দুলু ও ভিকটিম সুমন স্বর্ণ চোরাচালান ও মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত ছিল। এই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে লেনদেন হয়। লেনদেনের বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। সুমনের কাছ থেকে আসামী দুলু টাকা পাওনা থাকলেও টাকা না পাওয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। আসামী দুলু বাকবিতন্ডার জের ধরে নিজে ভিকটিম সুমনকে আসামী মামুন, নুর হাসান রিটুদের সহায়তায় লোহার রড, প্লাস্টিকের পাইপ, লোহার প্লাস, দিয়ে বেধড়ক মারধর করে হত্যা করে।

ঘটনার যেভাবে শুরু—
ভিকটিম সুমন মাদক সেবনরত অবস্থায় দুলুকে স্বর্ণ ক্রয়ের জন্য টেকনাফ নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। বিষয়টি মামুন জানতে পেরে দুলুর মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেয় যে, সুমন দুলুকে মারার জন্য লোক ঠিক করেছে। তাকে টেকনাফ নিয়ে যাবে মেরে ফেলতে। এবং ইতিমধ্যে কয়েকজন লোককে দিয়ে দুলুর রিয়াজউদ্দিন বাজারস্থ অফিস রেকি করিয়েছে।
সুমন ২৬ নভেম্বর রাতের বেলায় দুলুর ভাড়াকৃত রুমে মাদক সেবন করতে গেলে সেখানে তাকে আটক করে ভাড়াটিয়া খুনিদের বিষয়ে জিজ্ঞাবাদ করে। মারার জন্য কাকে ঠিক করেছে এবং দুই জন লোক দিয়ে তার বাসা রেকি করার বিষয়ে বারংবার জিজ্ঞেস করলেও সুমন কোনো তথ্য দিতে পারেনি। এই বিষয়ে সুমন কোন তথ্য না দেওয়াতে দুলু ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি, লোহার রড, প্লাস্টিকের পাইপ, লোহার প্লাস দিয়ে মারধর করে সুমনের কাছ থেকে তথ্য বের করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে মামুন ও নুর হাসান রিটু দেরকে দিয়ে মারধর করে তথ্য বের করার চেষ্টা করেও না পেয়ে সুমনকে হাত বেধে উলঙ্গ করে এলোপাতাড়ী মারধর করে হত্যা করে।

গ্রেপ্তারকৃত মফিজুর রহমান দুলু (৫৬) চন্দনাইশের বরমা ইউনিয়নের ইসহাক মিয়া বাড়ির মরহুম ইছহাক মিয়ার ছেলে। মোঃ মামুন (৩৮), কোতোয়ালী থানার আলকরন ৩ নম্বর গলির মোঃ গোলাম মোস্তফার ছেলে।
নুর হাসান রিটু (২৮) এনায়েত বাজার ২ নম্বর গলির আব্দুল আলী সওদাগরের ছেলে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।